ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই বলেছেন, বর্তমান সরকার আমাদের উপর জগদ্দল পারের ন্যায় চেপে বসেছে। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের নামে জাতির সাথে গাদ্দারী করে তড়িঘড়ি করে মন্ত্রীসভা গঠন ও শপথ করিয়ে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করেছে। মন্ত্রীসভায় এমন একজন ব্যক্তিকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে, যিনি নিজেকে ভারতের এবং জয়শ্রীরামের একনিষ্ঠ ভক্ত দাবি করে থাকেন। শিক্ষা থেকে স্থায়ীভাবে ইসলাম ও ইসলামী সংষ্কৃতি বিতাড়নের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা থেকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে নুরুল ইসলাম নাহিদ, ডা. দিপুমনির পর এবার মহিবুল হাসান নওফেলকে দেয়া হয়েছে। কথিত আছে নওফেল হিন্দু উগ্রপন্থি সংগঠন ইসকনের সদস্য। যার ফলে সর্বপ্রথম নওফেলকে ইসকন সংবর্ধনা দিয়েছে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসকন সদস্যের হাতে শিক্ষা ব্যভস্থাকে ন্যস্ত করে দেশে কোনধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে চায় সরকার? ইসকন তোন অন্য কোন মন্ত্রী সংবর্ধনা দেয়নি। তাহলে এটা কিসের আলামত? তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়ে কীভাবে বলতে পারে আমি শুধু শেখ হাসিনরা প্রার্থী না আমি ভারতেরও প্রার্থী। এধরনের বক্তব্যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে। আমরা শঙ্কিত আমরা কী স্বাধীন দেশে আছি? নাকি পরাধীন।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নগর ওলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহনগর দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মাওলানা ইউনুছ ঢালীর সভাপতিত্বে এবং মুফতী বাছির উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, উপদেষ্টা মাদানীনগর মাদরাসার প্রধান মুফতী আল্লামা ওমর ফারুক সন্ধিপী, যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতী মোফাজ্জল হোসাইন। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মাওলানা শামসুদ্দোহা আশরাফী, হাফেজ মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, মুফতী শাহজাহান আল-হাবিবী, মাওলানা মঈনুদ্দীন খান, মুফতী নূমান আল-হুসাইনী, মুফতী আবু সাঈদ মাজহারী, মাওলানা মাসুম মাহমুদী, মুফতী আরিফ বিন হাবিবী, মুফতী সাঈদ আহমদ।
সম্মেলনে হাফেজ মাওলানা ইউনুছ ঢালীকে সভাপতি মুফতী আজহারুল ইসলাম আজমীকে সহ-সভাপতি এবং মুফতী রফিকুল ইসলাম আশরাফীকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কমিটি ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি। মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আলেমগণ নবী আলাইহিমুসসালামগণের ওয়ারিস হিসেবে তাঁদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক সঙ্কট নিয়ে একজন সাধারণ মানুষ নির্বিকার থাকতে পারেন কিন্তু একজন আলেম নির্বিকার থাকতে পারেন না। তাঁরা তাদের দায়িত্ব ভুলে আত্মপরিচয় ভুলে গট্টারিকা প্রবাহ গা ভাসাতে পারেন না। ওলামায়ে কিরাম হবেন নিপীড়িত মাজলুমের শেষ আশ্রয়স্থল। সেই দায়িত্ব পালনের জন্যই জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সূচনা। জালিমদের কবল থেকে নেতৃত্ব উদ্ধার করে সমাজ ও রাষ্ট্রে আলেমদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আলেম সমাজকে জাতির যে কোন সুখে দুঃখে এগিয়ে আসতে হবে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ৭ জানুয়ারি প্রহসনের ডামি নির্বাচন ও ডামি মন্ত্রীসভা গঠনের পর সচেতন দেশবাসী শঙ্কিত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে। দেশ কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কোন পথে? রাজনৈতিক ও সামজিক তিনি জাতিসত্তাবিরোধী শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধন করে দেশের অধিকাংশ মানুষের চিন্তা চেতনার আলোকে প্রণয়নের দাবি জানান। অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, শাসকগোষ্ঠীর জুলুম নির্যাতন ও ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ওলামায়ে কেরামকে রুখে দাড়াতে হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার দেশে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের জন্য এমন একজনকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে, যিনি জয়শ্রীরাম শ্লোগান তুলে এবং বলে মন্দিরে গেলে ঈশান যাবে না। এমন হিন্দুবাদীকে শিক্ষামন্ত্রী করায় দেশের ৯২ ভাগ মুসলমান শঙ্কিত শিক্ষা নিয়ে। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইউনুছ ঢালী বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। কোন প্রার্থী যখন বলেন আমি ভারতের প্রার্থী, তখন আমাদেরকে শঙ্কিত করে তুলে। তিনি স্বাধীনতার অতন্ত্র প্রহরী ওলামায়ে কেরামকে জেগে উঠতে হবে।