নরসিংদীর পলাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সিন ওয়ান নামে একটি ব্যাটারি কারখানা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ সহ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সরকারি কমিশনার ও রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত থেকে এই কারখানা বন্ধ করেন।
জানা যায়, পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া এলাকায় নির্মানাধীন আশরাফ টেক্সটাইল নামে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে “জিন ওয়ান লিমিটেড” নামের একটি কোম্পানি দীর্ঘদিন যাবত কোন কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে নিম্নমানের ব্যাটারি তৈরি করে আসছে। এসব ব্যাটারি দেশের ইজিবাইক সহ ব্যাটারি চালিত বিভিন্ন যানবাহনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া এই কারখানার নিঃসৃত গ্যাস আশেপাশের জমিতে পড়ে জমির পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় জমিগুলো চাষাবাদের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। ফলে এই জমিগুলো বছরের পর বছর অনাবাদি হিসেবে পড়ে থাকে। স্থানীয় পলাশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে এই কারখানা থেকে নিঃসৃত কেমিক্যাল আশেপাশের প্রায় ৯০ হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। যার ফলে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটছে। এই অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা কারখানা বন্ধের জন্য স্থানীয়ভাবে আন্দোলন সহ প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পলাশ উপজেলা প্রশাসন কৃষি অফিসের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ তদন্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে কারখানাটি অবৈধ বলে প্রতিয়মান হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম এর নির্দেশনায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ সিলভিয়া স্নিগ্ধা,পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক প্রশান্ত কুমার রায় সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান জানান,পলাশের ফুলবাড়িয়া এলাকায় ‘জিন ওয়ান স্টোরেজ লিমিটেড’ নামক একটি বৃহৎ ব্যাটারি কারখানায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৪, ৬ক, ৯ ও ১২ ধারা লঙ্ঘন করে কারখানা পরিচালনা করে পরিবেশ দূষণ করে আসছে।
এ সময় কারখানাটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। “জিন ওয়ান” স্টোরেজ লিমিটেড এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ নিম্নমানের ইটিপি এবং এটিপি ব্যতিরেকে ব্যাটারি উৎপাদন করে পরিবেশ দূষণ করে আসছিল। এ বিষয়টি সাংবাদিকদের নরসিংদী জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর অধীনে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সামগ্রী উত্পাদন, বিক্রয় ইত্যাদির উপর বাধা-নিষেধ,অতিরিক্ত পরিবেশ দুষক নির্গমন
এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে উক্ত কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।