পৌষের শেষ দিকে জেঁকে বসেছে শীত। মধ্যরাত থেকে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
এই তাপমাত্রা আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হতে থাকে।গত দুই দিন দুপুর ১২টার আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে সকাল বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। সিএনজিচালক সুমন জানায়, কুয়াশার কারণে ধীরগতিতে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। এদিকে কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুর মজবির রহমান বলেন, তিন দিন ধরে কুয়াশা পড়ছে, সঙ্গে কনকনে শীত। কাজ করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে।
রিকশাচালক কাবিল হোসেন বলেন, শীতের কারণে যাত্রী পাওয়া যায় না। তীব্র শীত আর ঠান্ডা বাতাসে রাস্তাঘাটে মানুষজন কম চলাফেরা করছে। বাসায় বাজার নাই ,তাই এই কনকনে শীতে গাড়ী বের করেছি। খড়কুটো জ্বালিয়ে অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে বোরো ও সবজিখেতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। পবা উপজেলার ধর্মঘটনা গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন সুমন বলেন, শীতের কারণে বোরো বীজতলা, আলু, মরিচসহ নানা ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া তাদের জমিতে ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন কাজ বন্ধ প্রায়। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষের জীবন। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও এই শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে।
প্রচণ্ড শীতের কারণে শিশুসহ বিভিন্ন বয়েসের মানুষের শীতজনিত রোগ ব্যাপক বেড়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহে রাজশাহীতে গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে শুক্রবার তাপামাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে এসেছে। শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি শূন্য নটস।তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজশাহী অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বলে তিনি জানান। । এ হিসাবে আগের দুই দিনের তুলনায় রাজশাহী অঞ্চলের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে।