তীব্র শীতে কাঁপছে নওগাঁবাসী

গত কয়েক দিনের কনকনে শীত ও উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় ঘরের বাইরে থাকা দায়। এদিকে কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নওগাঁর খেটে খাওয়া দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের জনজীবন। বিশেষ করে এখন জেলার দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা চরম শোচনীয়।

উত্তরের হিমেল হাওয়া আর কুয়াশার কারনে জেলায় তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়ায় শীতে বিপর্যস্থ জনজীবন। শনিবার (১৩ জানুয়ারী)  সকাল ৬টায় জেলায় সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছি আবহাওয়া অফিস। শীতে ছোট বড় বৃদ্ধ সকলেই কষ্ট পাচ্ছে। ঠান্ডায় সময়মত কাজে না যেতে না পাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ দিনমজুররা। অনেকে আবার জীবিকার তাগিদে শীতকে উপেক্ষা করে কাজ করছেন। অনেকে আবার খরের গাদায় আগুন লাগিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।

এদিকে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ ভির করছে পুরনো কাপড়ের দোকানে। দিনের বেশির ভাগ সময়টা দেখা মিলছে না সূর্যের। গত কয়েক দিন ধরে বেড়েই চলেছে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বৃষ্টির মতো নামছে শীতের শিশির সেই সাথে উত্তরের ঠান্ডা হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে তুলেছে শীতের মাত্রাকে। এ অবস্থায় হাড় কাঁপানো শীতে কষ্ট পাচ্ছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। কাজে যোগ দিতে না পেরে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের অনেকের নেই শীতের গরম কাপড়। শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শ্রমজীবী নারী, শিশু ও বৃদ্ধারা।

শনিবার দিনব্যাপী সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শ্রমজীবী নারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কাজ করেন বাড়িতে ও বিভিন্ন ফসলের মাঠে। তারা জানান, ভোরে ঘুম থেকে ওঠে নিজেই রান্না-বান্না করতে হয়। এই শীতে সাংসারিক কাজকর্ম সেরে কর্মস্থলে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়।

কথা হয় জেলার সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের সাথে তিনি জানান, খুব সকাল সকাল তাকে ঘুম থেকে উঠে কর্মস্থলে আসতে হয়। কয়েক দিনের শীতে তাকে কর্মস্থলে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পেটের দায়ে অনেকেই দিনমজুর হিসেবে মাটি কেটে, ইটভাটায় কাজ করে জীবিকানির্বাহ করেন। এদের মধ্যে অনেকই রয়েছে বৃদ্ধ। শীতের তীব্রতা ও গরম কাপড়ের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।

ইটভাটায় কর্মরত শরিফুল ইসলাম জানান, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ। পেটের দায়ে বৃদ্ধ বয়সে কাজ করছেন ইটভাটায়। থাকেন ইটভাটার এক খুপড়ি ঘরে। তিনি বলেন শীতের কারণে রাতে মাঝে মাঝে মনে হয় হাত-পা ঠান্ডায় বরফ হয়ে গেছে। উতেপু গ্রামের গ্রামের মুদি দোকানী হায়দার আলী বলেন, সকাল বেলা বের হলেও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি থাকায় লোকজন কম থাকে। এজন্য ব্যাবসা খুব ভালো হয়না। শিতে মানুষ ঘর থেকে বেড় না হওয়ায় বেচা বিক্রি খুব কম। এসব নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষ চায় স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে। শীতের তীব্রতা তাদের এ বেঁচে থাকার অধিকারও যেন কেড়ে নিতে চাচ্ছে। এজন্য এসব খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের পাশে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকার সদয় হয়ে পাশে দাঁড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা।

এ ব্যাপারে বদলগাছী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বলেন, ‘ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

Recommended For You