চুয়াডাঙ্গায় প্রতি সপ্তাহের সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বসে ছুটির দিনের বাজার। চুয়াডাঙ্গা শহরের বড়বাজার ও শহীদ হাসান চত্বর এলাকায় সড়কের দু পাশে দেখা মেলে এ ধরনের বাজার। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে রমরমা ব্যবসা। ছুটির দিনে অন্যান্য বিপণী বিতান ও শপিংমল বন্ধ থাকে, এ সুযোগে সড়কের পাশে বসে একদিনের জন্য এসব দোকানপাট। শুধুমাত্র ছুটির দিনে ফুটপাতে এমন দোকান গড়ে ওঠায় তা হলিডে মার্কেট নামে পরিচিতি পেয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বড়বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি শুক্রবার সড়কের পাশের ফুটপাতের জায়গা জুড়ে ব্যবসায়ীরা বসে বাহারি ধরনের নানা রংবেরংয়ের পোশাকের মস্ত বড় সব দোকান। শুধু কাপড়ই নয়, এখানে বিক্রি হয় জুতা ও প্রসাধনীও। যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো। বেলা যতই গড়ায় ততই ক্রেতা সমাগম বাড়তে থাকে। একদিকে ব্যবসায়িরা বিভিন্ন দামের অংক ধরে ছন্দে ছন্দে ডাকে ক্রেতাদের। আর সেই ছন্দের টানে ক্রেতাও বাড়তে থাকে। এই ফুটপাতের দোকানে প্রতি শুক্রবার প্রতিটা বাহারি ধরনের পোশাকের দামটাও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকে।
শুক্রবারে ফুটপাতের শপিংমল গুলোতে পাওয়া যায়, মেয়েদের বাহারি ধরনের বোরকা, সালোয়ার কামিজ, স্যান্ডেল জুতা, আর শিশুদের থাকে জমকালো বিভিন্ন রকমের বাহারি জামা কাপড়। এই দোকানগুলোতে মেয়েদের পাশাপাশি পাওয়া যায় ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের প্যান্ট, জামা, স্যান্ডেল জুতাসহ বিভিন্ন প্রসাধনী। এসব দোকানে প্রতি শুক্রবার বেচাকেনার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া এই ফুটপাতের দোকানগুলোতে পাওয়া যায় পুরনো গরম কাপড়ের পোশাক। যেখানে সকল শ্রেণির পেশার মানুষ এই পোশাক ক্রয় করে। একদিকে এসকল ক্রেতাদের খরচের মাত্রাটাও কমে। অপরদিকে শীতে স্বস্তি পায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
ফুটপাতের ব্যবসায়িরা জানান, প্রতি শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার সব শপিংমলগুলো বন্ধ থাকে। আর তাই এই দিনে আমরা কাপড় ব্যাবসায়িরা সবাই উদ্যোগ নিয়ে এই নানা ধরনের বাহারি পোশাক সাজিয়ে বিক্রি করি। এতে পোশাক ভালোই বিক্রি হয়। উচ্চবিত্তরা বড় বড় শপিংমলে বিভিন্ন পোশাক ক্রয় করে। কিন্তু যারা নিম্নবিত্ত তারা তো আর পারে না এই পোশাক কিনতে। সেই শ্রেণি পেশার মানুষের পাশাপাশি সবার জন্য এই হলিডে শপিংমল। যেখানে কম দামে পাওয়া যায় সেরা মানের পোশাক। তবে এই সরকার যদি কোনো সহযোগিতা করে তাহলে এই ফুটপাতের শপিংমল গুলো আরও ভালো মানের হবে।
ফুটপাতে শপিংমলে আসা এক ক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, অন্যান্য মার্কেটে নতুন পোশাকের দাম অনেক বেশি। সেখানে এই ফুটপাতের দোকানের পোশাকের দাম অনেক কম। তাই এই শুক্রবারের অপেক্ষায় থাকি কবে আসবে শুক্রবার আর কবে কিনবো নতুন পোশাক। বাজারের সব ধরনের পোশাকের দাম আকাশ ছোয়া সেখানে এই কম দামের এই পোশাক পেয়ে আমরা খুশি।
আরেক ক্রেতা রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এই শীতের কষ্ট নিবারণ করার জন্য নতুন শীতের পোশাক কিনতে গেলে হাজার হাজার টাকা লাগবে। সেখানে এই ফুটপাতের শপিংমল গুলোতে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে শীতের গরম পোশাক। আবার পুরনো পোশাকও পাওয়া যায়। এছাড়া আছে ছেলে ও মেয়েদের সব ধরনের পোশাক স্যান্ডেল জুতা। এই সব কিছুই পাওয়া যায় কম দামের এতে আমরা স্বস্তিবোধ করি।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা মার্কেটিং অফিসার সহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের পণ্যের দাম অনেক বেশি। সেখানে এই ফুটপাতের দোকানগুলোতে তুলনামূলক কম দামে ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুবিধার। তবে এই ফুটপাতের দোকানের কারণে যেন পথচারী চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।