জেলায় ১৫ লাখেরও বেশি ভোটার নিয়ে প্রবাসী অধ্যুসিত মৌলভীবাজার জেলার ৪ নির্বাচনী আসনে ভোটগ্রহণের আর মাত্র ২দিন বাকি। মাঠের বিরোধীদল বিএনপি জামায়াত ও তাদের মিত্রদলগুলোর বর্জনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪ আসনের মধ্যে ৩টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ন প্রার্থী না থাকায় নৌকার প্রার্থীর বিজয় এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
আর একটি মাত্র আসন রয়েছে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া)। যেখানে নির্বাচনী মাঠে ৮ জন প্রার্থী থাকলেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ন নির্বাচনের বাতাস পাওয়া যাচ্ছে ৩- হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে। এরা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, একেএম সফি আহমদ সলমান (স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ) ও তৃণমূল বিএনপি মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন। এই তিনজনই ভোটের মাঠে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। এই তিন প্রার্থীরই ব্যক্তি ইমেজের কারণে দলীয় ভোটের বাহিরেও নিজস্ব ভোট ব্যাংকও রয়েছে বলে জানা যায়। তবে নির্বাচনে ৩ প্রার্থীর সামনেই বড় চ্যালেঞ্জ ভোট কেন্দ্র সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা নিয়ে।
ওই আসনে ৮ প্রার্থীর মধ্যে মূলত তিন প্রার্থী ঘিরেই যত সব আলোচনা। ভোটের মাঠের জমজমাট লড়াইটাও হবে প্রভাবশালী তিন প্রার্থীর মধ্যে। প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোটের মাঠের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতার বিবেচনায় জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের সবার চোঁখ আপাদ দৃষ্টি এখন কুলাউড়ার দিকেই সবচেয়ে বেশি। কুলাউড়ার এই আসনটিতে অন্য প্রার্থীরা হলেন, মো: আব্দুল মতিন (স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ), মো: আব্দুল মালিক (জাতীয় পার্টি,এরশাদ), মাওলানা আছলাম হোসাইন রাহমানী (ইসলামী ঐক্যজোট),এনামুল হক মাহতাব (ইসলামি ফ্রন্ট) ও মো: কামরুজ্জামান সিমু (বিকল্প ধারা)।
মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বন ও পরিবেশমন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন এর সাথে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নূন্যতম যোগ্যতা সম্পন্ন ভোটের মাঠে ঠিকে থাকার মতো কোন প্রার্থী না থাকায় এই প্রার্থীর জয় এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। যদিও ওই আসনে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী আহমদ রিয়াজসহ আরও কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। একই চিত্র জেলার বাকী দুই আসন জুড়ে মৌলভীবাজার-৩ ও মৌলভীবাজার-৪।
তবে বড়লোখায় মো: শাহাব উদ্দিন ও মৌলভীবাজারে মো: জিল্লুর রহমান এবং শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এর জয় এখন শুধু মাত্র সময়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। কারণ এই ৩টি আসনেই কনকনে শীতের মত ভোটের মাঠ, এই আসনগুলোতে নৌকার প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগীতার লড়াইয়ে নেই কোন হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বীপ্রার্থী। তবে এই ৩টি আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে ভোট কেন্দ্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এই ৩টি আসনে নৌকার জয় সময়ের ব্যাপার হলেও ভোটের মাঠের প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠকসহ নির্বাচনী জনসভায় লোকসমাগমের দিক দিয়ে নৌকার প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে। অন্যসব প্রার্থীরা তেমন একটা প্রচারণায় নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩টিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের এক তরফা প্রচার-প্রচারণা চলছে। জয় নিশ্চিত জেনেও ৩ টি আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারণার মূল কারণ ভোটারদের আকৃষ্ট করা।
উল্লেখ্য; মৌলভীবাজার জেলায় ৬৭ টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৩৫ জন। এর মধ্যে পূরুষ ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৮জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৫৪৯টি ও স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে বুথ থাকবে ৩ হাজার ৩০৫টি।