গত ১৯ডিসেম্বর কাইটাইল গ্রামে নজরুল মেম্বারের বাড়িতে গানের আসরে বসাকে কেন্দ্র করে বাঁশরী বাফলা গ্রামের চন্দন মিয়ার ছেলে মাহফুজ এর সাথে জালেক মিয়ার ছেলে রুমান ও নূরুল হকের ছেলে ছাব্বিরের তর্কবিতর্ক হয়। এরই জের ধরে পরের দিন ২০ ডিসেম্বর মহফুজ কাইটাইল বাজারে সন্ধায় রুমানকে একা পেয়ে মারধর করে।
উক্ত ঘটনা মিমাংসা করার লক্ষে ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার কাইটাইল বাজারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম, কাইটাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ রয়েল, নূরুল ইসলাম নূরুসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক শালিসী বৈঠক বসে। শালিসে বিরোধ মিমাংসা না হওয়ায় ঐ দিন বাঁশরী গ্রামে দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে জুয়েল নামে এক যুবক নিহত হয়। এ নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর নিহতের ভাই জুবায়ের আহমেদ বাদী হয়ে নূরুল ইসলাম নূরুকে প্রধান আসামী করে ৩০জনের নাম উল্লেখ করে মদন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় একাধিক লোকজন ও ভুক্তভোগিরা জানান, মারামারি থামাতে দিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী হলেন আওয়ামীলীগ নেতা নূরুল ইসলাম নূরু। এমন ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাঁশরী গ্রামে। সে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তারা নূরুল ইসলাম নূরুকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবী করেন। সেই সাথে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থার দাবী জানান।
মদন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান, বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) কাইটাইল বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ রয়েল, আ’লীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন, নূরুল ইসলাম নূরু, মিলন মাস্টারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য বসি। শালিসের মাঝে হঠাৎ উত্তেজনা সৃষ্টি হলে দুইপক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উক্ত সংঘর্ষ আমি, ইউপি চেয়ারম্যান, নূরুল ইসলাম নূরুসহ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে থামানোর চেষ্টা করি। সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়ে আমরা চলে আসি।
নিহতের ফুফু রাহেলা আক্তারের সাথে বুধবার (৩ জানুয়ারি) কথা বললে সে জানায়, নিজেদের গোষ্ঠীর সাথে মারামারি লাগছে তাই আমার ভাতিজা জুয়েল মারামারিতে গেছে। মারামারিতে জুয়েল আহত হলে সকলে মিলে মদন হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা গেছে। আমার ভাতিজা জুয়েল হত্যার বিচার চাই।
ভুক্তভোগী নূরুল ইসলাম নূরু জানান, আমি মারামারি ঘটনার সাথে জড়িত না। পক্ষে বিপক্ষে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আমি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় লোকজন বিবাদ মিমাংসার চেষ্টা করেছি। তারপরও আমাকে অন্যায়ভাবে একটি হত্যা মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণভাবে আমাকে হেয় ও হয়রানির চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে মদন থানার ওসি উজ্জ্বল কান্তি সরকার জানান, বাদী পক্ষ মামলায় নূরুল ইসলাম নূরুকে প্রধান আসামী করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। ঘটনার সাথে সে জড়িত না থাকলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। আমরা সবসময় ন্যায়ের পক্ষে আইনী সহায়তা দিতে প্রস্তুত।