চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস ও ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ডিবি (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আলী হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সামীম কবিরের দিক-নির্দেশনায়, সহকারী পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জনাব কাজী মোঃ তারেক আজিজের নেতৃত্বে স্পেশাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ হারুন অর রশিদ, এসআই (নি) মোঃ রাজীব হোসেন, এসআই (নি) রবিউল ইসলাম ও অন্যান্য সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন নতুন রেলওয়ে স্টেশনের বিপরীত পাশে হোটেল প্যারামাউন্টের সামনে থেকে গতকাল ০২ জানুয়ারী তারিখ রাত ১১:১০ মিনিটের সময় আন্তঃজেলা মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস প্রতারক মোঃ সোহান মীর সোহাগ (৩৩), পিতা- মোঃ দাউদ মীর, মাতা- রেহানা বেগম, সাং- চৌগাছি মধ্যপাড়া, দাঁড়িয়াপুর ইউপি, ওয়ার্ড নং- ০২, থানা-শ্রীপুর, জেলা -মাগুরা-কে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১৯ (ঊনিশ) টি মোবাইল সিম কার্ড, প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত নগদ ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা ও ০২ টি মোবাইল সেটসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ডিবি (বন্দর- পশ্চিম) সুত্রে জানা যায় ধৃত আসামি মোঃ সোহান মীর সোহাগ(৩৩) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তার নিকট হতে উদ্ধাকৃত সিমগুলো বিভিন্ন অপরিচিত ব্যক্তিদের নামে নিবন্ধনকৃত এবং প্রত্যেকটি সিমে অপরিচিত ব্যক্তিদের নামে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস মার্চেন্ট ও পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট নিবন্ধন করা। সে উক্ত সিমগুলো ও মোবাইল ফোনগুলো মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস প্রতারণার কাজে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায় যে, তার মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস নিবন্ধনকৃত সিমগুলো এবং ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করে প্রতিদিন ২,৫০,০০০/- থেকে ৩,০০,০০০/- টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় তার অধীনস্থ চক্রটি। তার নিকট হতে উদ্ধার হওয়া ৩,০০,০০০/- টাকা গত ০২/০১/২০২৪ তারিখ প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা। ধৃত আসামি একজন পেশাদার মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং টিম লিডার। সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তার সাথে থাকা সিমগুলো দিয়ে মোবাইল ফিনানশিয়াল সার্ভিস প্রতারণা করে আসছে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায় সে নিজে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস প্রতারণা করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিকাশ প্রতারক ও ভুলিয়ে-ভালিয়ে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্যদের টাকা তার নিজস্ব মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস ও ব্যাংক একাউন্টে জমা নিয়ে সেই টাকা নিরাপদ অবস্থানের সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের কমিশন গ্রহন করে। সে জানায়, ৬ জন পরিচিত প্রতারকসহ বিভিন্ন জেলার পঞ্চাশের অধিক প্রতারক তার একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে, এই চক্রের সাথে জড়িত হওয়ার পূর্বে সে রাজমিস্ত্রীর কাজ করত।
এ সংক্রান্তে কোতোয়ালী থানার মামলা নং- ০৩, তারিখ-০৩/০১/২০২৪, ধারা- ২০০০১ সালের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ৭৩ তৎসহ পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ রুজু করা হয়েছে।