কক্সবাজার-২ আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নৌকা 

আগামী ৭ জানুয়ারি (রবিবার) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ উপলক্ষে কুতুবদিয়ায় যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া -মহেশখালী) আসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দেয়া তথ্য মতে এখানে মোট ভোটারের সংখ্যা ৯৫ হাজার ৫২৩জন। নারী ভোটার ৪৫ হাজার ২৭জন এবং পুরুষ  ভোটার ৫০ হাজার ৪৯৬ জন। এখানে মোট কেন্দ্র ৩৭ টি। তারমধ্যে সাধারণ ৭টি, ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি।
নির্বাচনকে ঘিরে কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনে চলছে তুমুল প্রচারণা। স্থানীয় নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে পরপর দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান এমপি আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি কুতুবদিয়া-মহেশখালীতে বহু উন্নয়নের রূপকার। তাঁর হাত ধরে গ্রামীণ জনপদের অবকাঠামোগত আমুল পরিবর্তন হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি কুতুবদিয়ায় একটি বিশাল পথসভাসহ বেশ কয়েকটি পথসভার অফিস উদ্বোধন করেছেন। কুতুবদিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন এমপি সহধর্মিণীও। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় নারীদের সাথে উঠান বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন তিনি। তুলে ধরছেন উন্নয়নের কথা। ভোট চাইছেন নৌকা প্রতীকের জন্য। এছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীরাও নৌকায় ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পথসভায় ব্যস্তসময় পার করছেন জেলার নেতৃবৃন্দরাও। তাঁরা বিভিন্ন পথসভায় শেখ হাসিনার সরকার পঞ্চম বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপিকে ভোট দেওয়ার শপথ করেন নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত প্রার্থী শরিফ বাদশার সমর্থকরা জানান, আলহাজ্ব শরিফ বাদশা মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি দুইবারের ইউনিয়ন পরিষদের সফল চেয়ারম্যান এবং সর্বশেষ দলীয় নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের কক্সবাজার জেলার সাবেক সভাপতি তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনএম থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর কুতুবদিয়ায় তার একটি শোডাউন সকলের নজর কেড়েছে। স্বশস্ত্র বডিগার্ড সহ প্রচারণায় নেমে নিজের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য অনেকের। একটি পথসভায় তিনি নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের কারণে জরিমানাও খেয়েছেন। ফলে দ্বীপ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছেন নোঙর প্রতীকের শরিফ বাদশা। মহেশখালীতে তাঁর ভোট ব্যাংক রয়েছে বলে মন্তব্য তার সমর্থকদের। ফলে কুতুবদিয়া থেকে ৩৫ শতাংশ ভোট পেলে তিনি এমপি নির্বাচিত হবেন।এমন ধারণা অনেকের।
স্থানীয় সাধারণ ভোটাররা জানান, নোঙর প্রতীকের প্রচারণা চোখে পারার মতো। দিনরাত পরিশ্রম করে ঘরে ঘরে প্রচারণাসহ মাঠে মাইকিং প্রচারণাতে এগিয়ে রয়েছে নোঙর। স্থানীয় দুইটি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শরিফ বাদশা সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন বলে মন্তব্য তাদের। তবে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা মনে করেন কুতুবদিয়ায় আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিকের ভোট ব্যাংক রয়েছে। কুতুবদিয়ায় সর্বোচ্চ ভোটে এগিয়ে থাকবেন তিনি। তাই এখানে তাঁর সাথে অন্য কোন প্রার্থীর তুলনা চলে না।
স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জানান, এবার শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভোটারদের কেন্দ্রের দিকে টানতে উভয় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা কাজ করছেন। শরীফ বাদশাও একজন আওয়ামী লীগের গুনি নেতা ছিলেন। মসজিদ, মাদ্রাসায় দানসহ ধর্মীয় অনুভূতি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি। বিএনপি জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী গোপনে ও প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছে। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীও প্রকাশ্যে এবং গোপনে শরীফ বাদশার জন্য  নোঙর প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সে হিসেবে শরিফ বাদশা  নির্বাচন করায় ভোটের সহজ হিসাবটা মিলানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য সমর্থকদের। যে যাই বলুক কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া – মহেশখালী)  আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নৌকা।
শেয়ার করুন:

Recommended For You