
কথায় বলে, উচ্চবিত্তের বিয়ের ক্ষণ একটু দেরিতেই আসে। প্রবাদের প্রমাণ মিলেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে। সদ্য আলোচনায় আসা ঐ প্রতিবেদনে বিবিএস জানিয়েছে, দেশে সবচেয়ে বেশি বয়সে বিয়ে করেন সিলেটের ছেলেমেয়েরা। এ বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৭ বছর এবং মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ২১ বছর ৪ মাস। তবে দেশের আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে হয় রাজশাহী বিভাগের মেয়েদের। আর সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে করেন ময়মনসিংহের ছেলেরা।
জানা যায়, সিলেট অঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ বিদেশমুখী। পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই তারা ছড়িয়ে আছে। বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে এসে বিয়ে করতে তাদের সময় লাগে বেশি।
দেশজুড়ে ২০২২ সালে (১৫ থেকে ২১ জুন) এ জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। একই বছর ২৭ জুলাই শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আর গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে বিবিএস। বর্তমানে দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন বলেন, এ অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা আগে অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান। বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার দেখে ছেলে কতটা প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া এ অঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ বিদেশমুখী। তাই বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে এসে বিয়ে করতে তাদের সময় লাগে বেশি।
অন্যদিকে দেশের আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে হয় রাজশাহী বিভাগের মেয়েদের। এ বিভাগের মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন গড় বয়স ১৮ বছর ৬ মাস। আর দেশে সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে করেন ময়মনসিংহের ছেলেরা। এ বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৪ বছর ১ মাস। পাশাপাশি রংপুর, রাজশাহী ও খুলনার বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৪ বছর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বলেন, নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি সমাজে অনেক সচ্ছল পরিবারেও কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মানের কথা চিন্তা করে এ বিভাগের পরিবারগুলো মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে থাকতে পারে।
জনশুমারির তথ্য বলছে, দেশে ১০ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২৯ শতাংশ বর্তমানে অবিবাহিত। আর বিবাহিত মোট জনগোষ্ঠী ৬৫ শতাংশ। বাকি জনগোষ্ঠী হয় বিধবা, নয়তো বিপত্নীক।