
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। এতে জয়পুরহাট-১ আসনে অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু এবং জয়পুরহাট-২ আসনে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টির প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন তিনি।
সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা নিয়ে জয়পুরহাট-১ এবং কালাই-ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর উপজেলা নিয়ে জয়পুরহাট-২ আসন গঠিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাটের এই দুটি আসন থেকে ১৭ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে জয়পুরহাট-১ আসনে ১৪ জন ও জয়পুরহাট-২ আসনে তিনজন।
সামছুল আলম দুদু
জয়পুরহাট-১ আসনে সামছুল আলম দুদু বর্তমানে সংসদ সদস্য রয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। তিনি একাধারে ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ছিলেন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য তিনি। সামছুল আলম দুদু ১৯৭৮ সালে ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৮৪ সালে পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচতি হন। ১৯৯৭ সালে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। ২০০০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনোনীত হন। এরপর ২০০৩ সালে পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। সেই সঙ্গে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র ছিলেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত এই নেতা ২০১৪ সালে দলীয় প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে দাঁড়ান। সেই সময় বিরোধীদলগুলি নির্বাচন বর্জন করে তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলে সামছুল আলম দুদু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হন। সেসময় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আলেয়া বেগমকে পরাজিত এক লাখ ৩৫ হাজার ৬১৩ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন।
সামছুল আলম দুদু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি সদস্য পদে রয়েছেন। এবার তিনি দলীয় নৌকা প্রতীকে আবারও জয়পুরহাট-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন
জয়পুরহাট-২ আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য রয়েছেন আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। তিনিও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৫ম বারের মতো সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮১ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন এই নেতা। ১৯৯১ থেকে ৯২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯২-৯৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪-৯৮ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে চলে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের পদে। সেখানে টানা সাত বছর দায়িত্ব পালন করে ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান।
এরপর থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এই নেতা বর্তমান সময় পর্যন্ত টানা পাঁচবার একই পদে থেকে রাজনীতি করছেন। এই পদে থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে সক্রিয় করতে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর বিভাগের দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে দাঁড়ান। সেই সময় তিনি ৩ হাজার ১৫৯ ভোটের ব্যবধানের বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোস্তাফার কাছে হেরে যান। ২০১৪ সালের
নির্বাচনে তিনি আবারও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হন। সেসময় বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জন করে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০১৮ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হন। সেসময় তিনি বিএনপির প্রার্থী খলিলুর রহমানকে ২ লাখ ২ হাজার ৬১০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের পর এই নেতা জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পান। এবার তিনি দলীয় নৌকা প্রতীকে জয়পুরহাট-২ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।