এখন পর্যন্ত ২৫ কারখানায় ভাঙচুর, ১৩০টি বন্ধ : বিজিএমইএ

কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে আশুলিয়া, কাশিমপুর, মিরপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার ১৩০টি পোশাক কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।

রোববার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ অফিসে ‘পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ও বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশকিছু কারখানায় অজ্ঞাত উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকরা অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তাদের মারধর করেছে। কারখানার ভেতর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন বৈশ্বিক ও আর্থিক চাপের মধ্যে টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, ঠিক তখন পোশাক শিল্পকে নিয়ে নানান অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের শান্ত শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে অশান্ত করা হচ্ছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৫টি ফ্যাক্টরিতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কর্মকর্তাদের মারধর করা হচ্ছে। এর ফলে আশুলিয়া, কাশিমপুর, মিরপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর যেসব কারখানার শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী, সেগুলোতে কাজ চলছে।

ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারি ও যুদ্ধের কারণে আমরা যখন বৈশ্বিক ও আর্থিক চাপের মধ্যে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, ঠিক তখনই আমাদের এ শিল্পকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা অপতৎপরতা। একটি স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠী আমাদের শান্ত শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে অশান্ত করছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

ফারুক হাসানের অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এতে শিল্প ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ধরনের কার্যক্রম দেশদ্রোহিতার শামিল বলে আখ্যা দেন ফারুক হাসান।

ফারুক হাসান বলেন, ‘ইপিলিয়ন কারখানায় তিনজন মারা গেছে বলে যে কথা প্রচারিত হয়েছে, যা মোটেও সত্য নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’ যারা এ ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা গত ৩১ অক্টোবর ২০২৩ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম, সরকার নতুন যে বেতন কাঠামো ঘোষণা করবে, আমরা পোশাকশিল্পের সব উদ্যোক্তা সেটিই মেনে নেব, শিল্পে যত প্রতিকূলতাই থাকুক না কেন। আমরা ঘোষিত মজুরি মেনে নিয়েছি। যত কষ্টই হোক, এই মজুরি বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যদিও বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাকশিল্পের বাস্তবতায় এই মজুরি বাস্তবায়ন করা অনেক উদ্যোক্তার জন্যই জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হবে।’

ফারুক হাসান মজুরি বৃদ্ধির ইতিহাস তুলে ধরেন। বলেন, ২০১৮ সালে ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা করা হয়; ২০১৩ সালেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়; ২০১০ সালে যা ছিল ৩ হাজার টাকা। সেই হিসাবে তিনি বলেন, ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পোশাকশিল্পে মজুরি বৃদ্ধির হার ৩১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

শেয়ার করুন:

Recommended For You