জুমার নামাজের গুরুত্ব

আরবি ‘জুমুআহ’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া, একত্র হওয়া, কাতারবন্দী হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্তে কাতারবন্দী হয়ে দুই রাকাতের যে ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, তাকে ইসলামের পরিভাষায় সালাতুল জুমুআহ বা জুমার নামাজ বলা হয়। এই নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

সুরা ‘জুমা’ জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনায় আল্লাহ পাক বলছেন, ‘হে ইমানদারগণ! জুমার দিনে যখন সালাতের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং কেনাবেচা ত্যাগ করো, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে (সুরা জুমা, আয়াত ৯)।’

এর পরের আয়াতেই বলা হচ্ছে, ‘অতঃপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত ১০)।

জুমার দিন এবং এদিনের আমল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এককভাবে অন্য কোনো দিন বা সেদিনের নামাজ নিয়ে এত বর্ণনা আর পাওয়া যায় না।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জুমা’র রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে মারা যায়, আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিবেন।’ (তিরমিযী:১০৭৮)

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার ওপর সূর্য উদিত হয়েছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাঁকে জান্নাতে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে (সহিহ মুসলিম)।’

আমলের দিক থেকে আল্লাহ তাআলা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন, এর অন্যতম হলো জুমার দিন। এদিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক নানা ঘটনা।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে প্রথম মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল, দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল, তৃতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ছাগল কোরবানি করল। অতঃপর চতুর্থ যে ব্যক্তি মসজিদে গেল, সে যেন একটি মুরগি সদকা করল। আর পঞ্চম যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ডিম সদকা করল। এরপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুতবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে যায়।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮১)।

শেয়ার করুন:

Recommended For You