প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বায়ুমন্ডলের ওজোনস্তর সূর্য থেকে নিঃসরিত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি আটকে দিয়ে মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়।
আজ ‘বিশ্ব ওজোন দিবস’ উপলক্ষ্যে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব ওজোন দিবস’ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়ন করি-ওজোনস্তর রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করি’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, অ্যারোসল, ফোম তৈরিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে ক্লোরোফ্লোরোকার্বনসহ ব্যবহৃত দ্রব্যসমূহের কারণে প্রতিনিয়ত অতি গুরুত্বপূর্ণ ওজোনস্তরে ক্ষয়সাধন হচ্ছে। বায়ুমন্ডলের এ অতি গুরুত্বপূর্ণ স্তর সুরক্ষার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় ১৯৮৭ সাল থেকে মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে বিগত ৩৬ বছরে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ওজোনস্তর ধীরে ধীরে পুনর্গঠিত হতে শুরু করেছে এবং আশা করা যায় ওজোনস্তর ২০৬৬ সালের মধ্যে তার পূর্বাবস্থায় ফিরে আসবে। এছাড়া মন্ট্রিল প্রটোকলের কিগালি সংশোধনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাইড্রোফ্লোরোকার্বন (এইচএফসি) ব্যবহার পর্যায়ক্রমে হ্রাস এবং শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি-হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পর তিনি অন্যান্য গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশব্যাপী বনায়ন ও উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা মন্ট্রিল প্রটোকল যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠনের ফলে আমরা ওজোনস্তর পুনর্গঠনে নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে দেশে এইচসিএফসি, হ্যালন, মিথাইলক্লোরোফরম, মিথাইল ব্রোমাইড ইত্যাদি ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মন্ট্রিল প্রটোকল সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), ওজোন সচিবালয় ও বিশ্ব কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশন যথাক্রমে ২০১২, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে প্রশংসামূলক সনদপত্র (সার্টিফিকেট অব এপ্রিসিয়েশন) প্রদান করেছে, যা আমাদের সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।
তিনি আশা করেন, এবারের ‘বিশ্ব ওজোন দিবস’ পালনের মাধ্যমে মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি ওজোনস্তর রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব ওজোন দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।