এশিয়া কাপ থেকে বিদায়েল ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল আগেই। টুর্নামেন্টের বিচারে গুরুত্বহীন ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণই ছিল। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেতে এমন জয় নিশ্চয়ই কাজে দেবে। রোমাঞ্চকর ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে আসরের শেষটা রঙিন করে তুলল টাইগাররা। ব্যাটে-বলে প্রতিপক্ষের চেয়ে সেরা ক্রিকেট খেলে শেষ ওভারে বাংলাদেশ পেল দারুণ এক জয়।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুক্রবার ভারতকে ৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১ বল বাকি থাকতে ২৫৯ রানে অলআউট হয়েছে ভারত। শেষ ওভারে তাদের ১ উইকেট হাতে নিয়ে ১২ রান দরকার ছিল। কিন্তু সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা।
৪৯তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজ। শার্দুল ঠাকুরের পর ফেরান ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা অক্ষর প্যাটেলকেও। তাতেই ভারতের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় অনেকটাই। শেষ ওভারে আর পেরে উঠেনি তারা। চলতি আসরে এই প্রথম হারের স্বাদ পেল ভারত।
বাংলাদেশের অবশ্য আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। ভারত ও শ্রীলঙ্কা ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। আগামী রবিবার অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।
এদিন ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন ওপেনার শুভমন গিল। ১৩৩ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১২১ রান করেন তিনি। আট নম্বরে অক্ষর প্যাটেল খেলেন ৩৪ বলে ৪২ রানের ইনিংস। কিন্তু অন্য ব্যাটাররা নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে না পারায় তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরিটি দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেনি। পরাজয় বরণ করতে হয়েছে ভারতকে। দলটির পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সূর্যকুমার যাদবের। ৩৪ বলে ২৬ রান করেছেন তিনি।
বোলিংয়ে প্রথমে বাংলাদেশের জয়ে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে শূন্য রানে ফেরান তিনি। নিজের পরের ওভারে অভিষিক্ত তিলক ভর্মাকেও ব্যক্তিগত ৫ রানে তুলে নেন। অভিষেকে ১০ বলে জোড়া শিকার ধরেন তিনি। তাতে ১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।
শেষ ওভারে যখন ১ উইকেট হাতে নিয়ে ১২ রান প্রয়োজন ভারতের, তখন (জুনিয়র) সাকিবেই আস্থা রাখেন অধিনায়ক (সিনিয়র) সাকিব। প্রথম তিন বল ডট দিয়ে ম্যাচ অনেকটাই নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন তিনি। চতুর্থ বলে শামি বাউন্ডারি হাঁকালেও পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে যান। তাতেই জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।
শুরু ও শেষে অভিষিক্ত সাকিব তো দুর্দান্তই। ডেথ ওভারে মোস্তাফিজও দারুণ করেছেন। এর সঙ্গে শেখ মেহেদী হাসানের কথাও বলতে হবে। সেঞ্চুরিয়ান গিলকে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। সেট হয়ে যাওয়া সুর্যকুমার যাদবকে সাকিব যে বোল্ড করলেন, সেটাও ছিল অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট।
এর আগে ব্যাট হাতে দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি উপহার দেন অধিনায়ক সাকিবই। ৮৫ বলে ৮০ রান করেন ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। তাওহিদ হৃদয় খেলেন ৮১ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। নাসুম আহমেদ ক্যারিয়ারসেরা ৪৪ রান করেন। মেহেদী অপরাজিত ২৯ ও তানজিম সাকিব অপরাজিত ১৪ রান করলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রানের পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ।
ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব।