দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে: সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে। আগামীতেও যাতে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে একাধিক প্রশ্নোত্তরে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। দ্রব্যমূল্য নিয়ে গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা পৃথক প্রশ্ন করেন।

জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত মনিটরিং করছে। বাজারে সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে আমদানি বাধাসমূহ দূর করা, শুল্ক হার হ্রাস, গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা, বন্দরে দ্রুত খালাস নিশ্চিত করা, এলসি অনুযায়ী পণ্য আমদানি তদারকি করাসহ সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিনি ও ভোজ্যতেলের ওপর আরোপ করা শুল্ক হার অধিকতর যৌক্তিক করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোথ করা হয়েছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় পরিবহনে রাস্তাঘাটে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি না হয় সে জন্য জননিরাপত্তা বিভাগকে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পোল্ট্রি বাজারে অনিয়ম বা মনোপলি রয়েছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সময়ে সময়ে ভোজ্যতেল ও চিনির স্থানীয় বাজার মূল্য সমন্বয় করা হয় বলে দাবি করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদন্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি নির্ভর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব গরম মসলাসহ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের উপর পরিলক্ষিত হচ্ছে।

ঢাকা-২০ আসনের সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বর্তমানে ভারত, চীন ও পাকিস্তানসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ২৩ হাজার ৭৭ দশমিক ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাত হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ঘাটতি ৪৬৬ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার, ভূটানের সঙ্গে ১৪ দশমিক ২৯ এবং আফগানিস্থানের সঙ্গে ১ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে। অন্যদিকে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত নেপাল, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের সঙ্গে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ৪৮৮ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদন্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি নির্ভর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব গরম মসলাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের ওপর পরিলক্ষিত হচ্ছে।

গত অর্থবছরে ১১ লাখ ২৬ হাজার বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে

ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩৩ জন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে।

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জানান জনশক্তি রপ্তানির জন্য ১৮টি দেশ এবং চীনের স্বায়িত্বশাসিত হংকং-এর সঙ্গে চুক্তি/সমঝোতা স্মারক রয়েছে। দেশগুলো হলো- কুয়েত, কাতার, ওমান, লিবিয়া, মালদ্বীপ, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জর্ডান, বাহরাইন, ইরাক, ইউএই,সৌদি আরব, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, কম্বোডিয়া, গ্রিস এবং জাপান। ভবিষ্যতে মাল্টা, আলবেনিয়া, রুমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশসমূহের সঙ্গে চুক্তি/সমঝোতা স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You