
আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-২০ সম্মেলন। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ধনী দেশগুলোর কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় জনসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“কয়লা, গ্যাস বা হাইডোজেন নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে অর্থায়ন চাই” এই দাবিতে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্ত্বরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বদেশ, ক্লিন, বিডবিইউজিইউডি গ্রোথ ওয়াচ জনসম্মিলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে।
জনসম্মিলনে স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষাবিদ প্রফেসর আবদুল হামিদ, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এড. আজাদ হোসেন বেলাল, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক ও নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ জাসদ, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, ভূমিহীন নেতা আবদুস সামাদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলার নারীনেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, নদী-খাল-জলাশয় রক্ষা আন্দোলনের নেতা আদিত্য মল্লিক, মফিজুর রহমান, জেলা শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সভাপতি এস এম হাবিবুল হাসান, বৈশাখী পাল, হরিজন নেতা গৌরপদ দাশ, উন্নয়নকর্মী সাকিবুর রহমান, লুইস রানা গাইন, গাজী মাহিদা মিজান, সাংস্কৃতিককর্মী মোসফিকুর রহমান মিল্টন প্রমুখ।
বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে জনম্মিলনে সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মী, গ্রামীণ নারী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিককমী, রোভার স্কাউটস, নারী অধিকারকর্মী, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা ব্যানার, পেস্টুন, প্লাকাডসহ মুখোশ পরে জি-২০ নেতাদের কাছে বাংলাদেশর জ্বালানী খাতের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
জনসম্মিলনে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ বলেন, জি-২০ সংগঠনে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকা মহাদেশের বড় বড় উন্নত দেশগুলোই এর সদস্য।বিশ্বের উন্নত ধনী রাষ্ট্রগুলো অধিক পরিমাণে জ্বালানী ব্যবহার করে কার্বন নি:সরণ করছে। সেই কার্বন দূষণের খেশরাত দিতে হয় তৃতীয় বিশ্বের গরিব দেশগুলোর সাধারণ মানুষকে। ধনী দেশগুলো থেকে ঋণ নিয়ে বাংলাদেশসহ দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো কয়লা, ডিজেল ও ফার্নেস তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থাপন করছে। এর ফলে এসব গরিব উন্নয়নশীল দেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে অরাজকতা চলছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খরবগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে কি পরিমাণ সরকারি অর্থ তছরুপ হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে। জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতে দূর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ করার জোর দাবি জানায়।এছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে ভাড়ায় চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় জনগণের টাকা লুটপাট হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।
বক্তরা আরও বলেন, বাংলাদেশে বিগত দেড় দশক ধরে জ্বালানী খাতে অরাজকতা চলছে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ব্যবসার ৮০ শতাংশ জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর সাথে হয়ে থাকে। এর মধ্যে এশিয়া অঞ্চলের ৬টি দেশ থেকে বাংলাদেশ জ্বালানী তেল সংগ্রহ করে। বক্তারা ‘বাংলাদেশে কয়লা, গ্যাস বা হাইডোজেন নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে অর্থায়ন চাই’-দাবি জানিয়ে বলেন, আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানী দরকার নেই, আমাদের দরকার-নবায়নযোগ্য জ্বালানী। সেজন্য নেতৃবৃন্দ জি-২০ সম্মেলনে এই বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জোর দাবি জানান।