মারধরের শিকার হয়ে হল ছাড়লেন ছাত্রলীগের ১৫ কর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হলে সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক মারধরের শিকার হয়ে ১৫ জন জুনিয়র কর্মী তাদের আবাসিক হল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ভুক্তভোগী সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, হলটির দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ওই ১৫ জন শিক্ষার্থীর ২১১, ২১২, ২১৩ ও ২১৭ নম্বর কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে। এছাড়া, কক্ষগুলোর চেয়ার টেবিল অগোছালো অবস্থায় রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট রাতে একটি অটোরিকশা মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের দুই কর্মীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা একজন মাথায় আঘাত পান এবং মোটরসাইকেলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলের বন্ধুদের ডেকে অটোরিকশাটি আটক করে চালকের কাছে চিকিৎসার ব্যয়ভার এবং মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে অটোরিকশার মালিক জাবির এস্টেট অফিসের কর্মকর্তা মো. খাইরুল ঘটনাটি মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাদের জানান।

এ ঘটনায় সিনিয়র নেতা (হলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী) নিহান নিবিড় পলিটিকাল ব্লকে জুনিয়র কর্মীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে, তিনি এক কর্মীকে মারধর করেন। পরে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১৫ জন কর্মী তাদের কক্ষ ছেড়ে দেন। এরপর থেকে তারা আর ওই হলের কোনো কক্ষে ওঠেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী  সাংবাদিকদের বলেন, এর আগেও হলের এক নেতা তাদের একজনকে মারধর করেন। তখনও পলিটিক্যাল ব্লক ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন আমরা সবাই তৃতীয় বর্ষে পড়ি, এ বয়সে এসে যদি রাজনীতি করে নেতাদের কাছে মার খেতে হয় তাহলে রাজনীতি করে কী লাভ? তাই আমরা হল ছেড়েছি।

জানতে চাইলে মো. খাইরুল বলেন, ‘অটোরিকশাটি আমার না। ওইদিন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে ঘটনাটি ঘটলে চালক আমাকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। তখন আমি ভাসানী হলে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুর্ঘটনার জন্য ক্ষমা করে দিতে বলি। এরপর আর কোনো কিছু জানি না।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নিহান নিবিড় বলেন, জুনিয়রদেরকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। হলে অনেক সময় সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে মান-অভিমান হয়ে থাকে। হয়তো সেই অভিমান থেকে তারা কক্ষ ছেড়ে দিয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।

মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হোসাইন মোহাম্মদ সায়েম বলেন, হলে ছাত্রলীগ কাউকে মারধর করেছে কিনা আমার জানা নেই। আর কোন কক্ষ ফাঁকা থাকলে সেখানে দ্রুত গণরুম থেকে শিক্ষার্থীদের উঠানো হবে।

Recommended For You