দেবিদ্বারে একই স্থানে হঠাৎ ১৬টি কবর নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য

কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকায় নিউ মার্কেটের পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি গোরস্থানে হঠাৎ ১৬টি নতুন কবর নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিগার সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, যে জমিতে নতুন করে কবর হয়েছে তার মালিক রমিজ উদ্দিন মোল্লা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি ১৬টি নতুন কবর এবং মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের অনুরোধ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

দেবিদ্বার নিউ মার্কেটের প্রবীণ ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, ‘আমি প্রায় ৪০ বছর আগে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ে বাঁশঝাড়ের জমি কিনে মার্কেট তৈরি করে ব্যবসা শুরু করি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারা মারা গেলেন, কারা কবর দিলেন? জানাজা, মৃত্যুর বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার সংবাদও পাইনি।’

রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমার পূর্ব পুরুষদের কবরস্থান যৌথ মালিকানাধীন সম্পত্তির ওপর নির্দিষ্ট করা রয়েছে। গোরস্থানের পাশে আমার প্রায় ২ শতাংশ জমি রয়েছে। উক্ত জমির আরএস এবং সিএস খতিয়ানে পুকুরপাড় উল্লেখ আছে। এখানে আগে কোনো কবর ছিল না। এরই মধ্যে কে বা কারা আমার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি নতুন কবর দিয়েছে।’

তবে কবরস্থানের পাশের বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, আমাদের এই কবরস্থানটি মোল্লা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান। এটি ২১০ বছরের পুরোনো কবরস্থান। এখানে আমাদের অনেক পূর্বপুরুষ শায়িত আছেন। আগাছায় ভরে ওঠার পর কিছুদিন আগে আমরা পারিবারিকভাবে কবরস্থানটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেই। কবরস্থানটি পরিষ্কার করে নতুন মাটি ফেলে তাতে ফুলগাছ লাগানো হয়েছে। অথচ একটি কুচক্রী মহল আমাদের এই কবরস্থান নিয়ে গুজব রটাচ্ছে। মূলত এখানে ২ শতক জায়গা নিয়ে সমস্যা। একই এলাকার রমিজ মোল্লা ২ শতক জায়গা অন্যত্র বিক্রির চেষ্টা করে আসছেন। সেটাতে বাধা দেওয়ায় এসব গুজব রটানো হচ্ছে।

দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আমি কবরস্থান পরিদর্শন করেছি। এটি জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ। কবরস্থানের জমি বিক্রির চেষ্টা করা একটি গর্হিত কাজ। তদন্ত কমিটি হয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ঘটনার বিবরণ জানা যাবে।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহবায়ক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হানুল ইসলাম বলেন, নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিগার সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই এসিল্যান্ডকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

শেয়ার করুন:

Recommended For You