উখিয়ায় দৃশ্যমান হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তি

কক্সবাজারের উখিয়া কেন্দ্রীয় আনন্দ ভবন বৌদ্ধবিহারের মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ বুদ্ধমূর্তি। যার দৈর্ঘ্য ১৩০ ফুট। আর এই স্থাপনা নতুন এক পর্যটন সম্ভাবনা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহাসিক উখিয়া কেন্দ্রীয় আনন্দ ভবন বৌদ্ধ বিহারে ১৩০ ফুট বুদ্ধমূর্তির সামনে প্রায় ৬৫০০ স্কোয়ার ফুটের জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে মহাপুরুষদের নামে সেমিনার হল, ধর্ম সভামঞ্চ, লাইব্রেরি, ভিক্ষু সংঘের আসন, বুদ্ধ জাদী, জাদুঘর ও মহা কর্মযজ্ঞ।

উখিয়া উপজেলার রাজ পালং ইউনিয়নের পাতাবাড়ী এলাকায় আনন্দ ভবন বৌদ্ধ বিহারটি ১৭৮৩ সালে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান আনন্দ ভবন বৌদ্ধ বিহারে ৪০ জনের অধিক ভিক্ষু ও সেবক রয়েছেন।

জানা যায়, ২০১৭ সালে বুদ্ধমূর্তিটির কাজ শুরু হয়। এর উপাদান হিসেবে ইট কংক্রিট বালি লোহা ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ব্যয় ১ কোট ৮০ লক্ষ টাকা।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, মহামতি বুদ্ধ ২ হাজার ৫০০ বছরেরও বেশি সময় আগে ভারতের কুশী নগরে দেহত্যাগ করেছিলেন যে শয্যায়, সেই নকশাতেই নির্মাণ করা হচ্ছে মূর্তিটি। ১৩০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার মহাপরিনির্বাণ মূর্তিটি দেশে তো বটেই এশিয়াতেও হবে অন্যতম বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তি। ২০১৭ সালে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ, রংসহ বাকি কাজ শেষে ২০২৪ সালে উদ্বোধন করা হতে পারে।

চট্টগ্রাম থেকে স্ব পরিবারে দেখতে আসা পর্যটক শাহিনা জানান এ-ই প্রথম এশিয়া মহাদেশের বড় বৌদ্ধ মূর্তি উখিয়া আনন্দ ভবন বৌদ্ধ বিহারে দেখেছেন যার দৈর্ঘ্য ১৩০ ফিট।

স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা রোপন বড়ুয়া বলেন, দেশে-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পূজারী, পুণ্যার্থী, পর্যটক ও দর্শনার্থীর জন্য এটি অনেক বড় পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে। আমরা যদি ভালোভাবে প্রচার করতে পারি তাহলে এটা সম্ভব।

এ ছাড়াও স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়েরা বলছেন, দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পূজারি, পুণ্যার্থী, পর্যটক ও দর্শনার্থীর জন্য এটি অনেক বড় পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে।

মূর্তিটির প্রতিষ্ঠাতা ও উখিয়ার আনন্দ ভবন বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাবোধি মহাথেরো বলেন, ২০১৭ সালে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ। এই মূর্তির পুরো কাজ শেষ করতে আরও টাকার প্রয়োজন। উদ্বোধনের পর একটি উৎসর্গ অনুষ্ঠান করা হবে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষদের সংগ্রামী ও সাহসী জীবনযাপন পর্যটকদের মুখরিত করবে নিঃসন্দেহে। কক্সবাজার জেলার বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো একদিকে যেমন ধর্মীয় পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরি করছে অন্য দিকে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে সমৃদ্ধ করছে কক্সবাজারকে। এ থেকে পর্যটন শিল্পের নতুন সম্ভাবনার হয়ে উঠতে পারে।

নির্মাণাধীন মূর্তিটি ছাড়াও কক্সবাজারের রামুর উত্তর মিঠাছড়ির পাহাড় চূড়ায় রয়েছে গৌতমবুদ্ধের ১০০ ফুট লম্বা সিংহশয্যা মূর্তি। ইতোমধ্যে এ মূর্তিটিও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন।

শেয়ার করুন:

Recommended For You