ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীদের নেই নামমাত্র সুবিধা। নিজস্ব ক্লাসরুম, মাল্টিমিডিয়া সুবিধা, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংকটসহ নানান সমস্যা নিয়ে চলছে এই বিভাগ।
গত বছরের জানুয়ারিতে বিভাগটি অনুমোদনের সময় ইউজিসি একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিভাগটির শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম শুরু করতে প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠার দেড় বছরেও বিভাগটিতে নানান সমস্যা লেগেই রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। নিজস্ব শ্রেণিকক্ষ, বিভাগীয় অফিস, শিক্ষকদের কক্ষ, সেমিনার লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাব সুবিধার কোনোটিই নেই বিভাগটিতে। বিভাগের নাম মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম। কিন্তু নেই কোনো মাল্টিমিডিয়া সুবিধা। মাত্র ২ জন প্রভাষক দিয়ে চলছে বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম।
জানা যায়, বিভাগের সেমিস্টার সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশের ক্ষেত্রেও দীর্ঘসূত্রিতা দেখা গিয়েছে। সর্বশেষ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের ২য় সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ১২ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পরীক্ষার এক মাসের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করতে হবে। অথচ পরীক্ষা নেওয়ার পাঁচ মাস পর রেজাল্ট প্রকাশ করে বিভাগটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ভবনে ধার করা শ্রেণিকক্ষে পরিচালিত হয়ে আসছে বিভাগটির পাঠদান। শিক্ষক স্বল্পতার পাশাপাশি নেই পর্যাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী। অন্য বিভাগ থেকে ধার করা শিক্ষক দিয়ে কোনোমতে কোর্সগুলো শেষ করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এমন অবস্থায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এমন চলতে থাকলে সেশনজটের আশঙ্কা যেমন তৈরি হচ্ছে, তেমনই ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এসব শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগটির যাত্রা শুরু। বর্তমানে বিভাগে ২টি ব্যাচে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়াও নতুন একটি ব্যাচের ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, এভাবে চলতে থাকলে সেশনজট তৈরি হতে পারে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সিলেবাসে বেশকিছু টেকনিক্যাল কোর্স থাকলেও ল্যাবের অভাবে তেমন কিছুই শিখতে পারছি না। আবার অনেক সময়ই ক্লাস রুমের সংকটের কারণে ক্লাস করতে এসে ঘুরেও যেতে হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া নানান সংকটের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ক্লাসরুমের সংকট ইতোমধ্যে কেটে গেছে। দুইজন শিক্ষক চলতি বছরই নিয়োগ দেওয়া হবে। মাল্টিমিডিয়া ল্যাবের প্রজেক্ট ইউজিসিতে জমা দেওয়া আছে। ইউজিসি অনুমোদন না দিলে, আমরাই কিছু জিনিসপত্র কিনে প্রাথমিকভাবে ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করবো।