
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বাড়ির গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া চা দোকানীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এনজিওর ঋণের টাকা শোধ করতে না পারায় তিনি মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের। গতকাল রোববার রাতেও দুজন এনজিও কর্মী কিস্তির টাকার জন্য তার বাড়িতে বসে ছিলেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্বজনেরা। চা দোকানী সানা উল্লাহ (৬০) উপজেলার বামনী ইউনিয়নের পূর্ব সাগরদী গ্রামের মৃত আবদুল হক কাজীর ছেলে। সানা উল্লাহ ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বরত ছিলেন।
সানা উল্লাহ বাড়ির পাশে চা দোকান করে সংসার চালাতেন। তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুই শতক জমির ওপর ঘর করে স্ত্রী ও তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন।
সানা উল্লাহর বড় ভাই আনসার উল্যাহ জানান, চারটি সংস্থা থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন সানা উল্লাহ। ব্যবসা ভালো না চলায়, অভাবের কারণে তিনি ঠিকমতো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। এ নিয়ে প্রায় সময় এনজিওর মাঠকর্মীরা বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য বসে থাকতেন। কোনো কোনো এনজিওকর্মী গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান নিতেন এবং অপমানজনক কথা বলতেন। গতকাল রোববার রাতেও ১২টা পর্যন্ত দুজন কিস্তির টাকার জন্য বাড়িতে অবস্থান নেন। এতে অপমান বোধ করেন সানা উল্লাহ। সকালে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এবং অপমান সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল আলম সুমন বলেন, সানা উল্লাহ চা বিক্রি করে যা আয় করতেন তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। দুই ছেলের লেখাপড়া এবং সংসারের ব্যয় মেটাতে তিনি কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নেন। এ ছাড়া কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকেও সাপ্তাহিক পরিশোধের শর্তে টাকা ধার নেন। দেনার চাপে হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে আমাদের ধারণা।
এ বিষয়ে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।পরিবার থেকে এখনো কোন মামলা করা হয়নি।