পেঁয়াজের দাম আবারো বাড়ছে

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে।পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের ৪০% শুল্ক আরোপের পর গত তিন দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে যশোরের খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) যশোরের বেনাপোলসহ শার্শা, নাভারন, বাগআঁচড়ায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের বাড়তি দামে ক্রেতারা হতাশ। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ চেয়েছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই আমদানির বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৬ লাখ টন। এর মধ্যে ভারত থেকে ৭ থেকে ৮ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।

বেনাপোল বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সবুর হোসেন বলেন, “আমদানি না থাকলেও পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। তাই দাম বাড়ছে। বেশি দামেও পেঁয়াজ মিলছে না।”

তিনি আরও বলেন, “শুল্ক আরোপ করায় অনেকে পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। এ কারণে বাজার ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি করা না হলে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।”

বেনাপোল বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মাহমুদুল হাসান বলেন, “গত তিন দিন ধরেই দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি কিনেছি। আজ (মঙ্গলবার) বাজারে এসে দেখি দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা।”

নাভারন বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আলমগীর হোসেন বলেন, “প্রতিদিনই তো কাঁচাবাজারে বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। এখন পেঁয়াজ কেনার মতো অবস্থা নেই। তিন দিনে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে।”

শার্শার লক্ষণপুর বাজারে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আতাউর রহমান জানান, দুই সপ্তাহ আগে পাইকারিতে ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে তিনি পেঁয়াজ কিনেছেন। তখন বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকায়। তিন দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে।

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, এই স্থলবন্দর দিয়ে আগে ১৫-২০ ট্রাক পেঁয়াজ প্রতিদিন আমদানি হলেও গত তিন দিনে ভারত থেকে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ বছর প্রায় ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে সাড়ে তিন লাখ টনের মতো পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বেনাপোল দিয়ে শনিবার থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সাড়ে ৪৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।

ভারতের স্থানীয় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ১৯ আগস্ট পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০% শুল্ক আরোপ করেছে দেশটির সরকার। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You