৩৫ মণ ডলারের দাম ২৫ লাখ টাকা

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট। একই সঙ্গে জমজমাট বেশকিছু গরুর খামার। হরেক রকম নাম, মান ও গুণের কারণে আলোচনায় থাকা গরু নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ৩৫ মণ ওজনের ‘ডলার’। ষাঁড়টিকে দেখতে প্রতিদিন খামারে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। ক্রেতাদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে দেখতে আসছেন ডলারকে।

বিশেষভাবে পালন করা ডলারের দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। ষাড়টি জেলায় নজর কাড়ছে সবার।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডলারের উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট, দৈর্ঘ্য সাড়ে ৯ ফুট, প্রস্থ প্রায় ৩ ফুট। আমেরিকান ব্রাহমা ও ব্রাঙ্কাস প্রজাতির ষাঁড় এটি। খামারে বিশেষ যত্নে লালনপালন করা হয় তাকে।

ডলারের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন ৯ শ্রমিক। তারা ডলারকে সময়মতো তিন বেলা গোসল করানো থেকে শুরু করে খাবার খাওয়ানোর কাজ করে থাকেন। ডলারকে গোসল করাতে ব্যবহার হয় সাবান আর শ্যাম্পু। তাকে খাওয়ানো হয় সবুজ ঘাস, দানাদার খাবার। এ ছাড়া মৌসুমি ফলও রয়েছে তার খাবারের তালিকায়। পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় ডলারের।

জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ছোট বড় খামারি ও কৃষক বিভিন্ন প্রজাতির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া মোটাতাজা করেছে। এতে খামারে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬টি গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ৭১ হাজার ৭১২টি, মহিষ ১ হাজার ৪০৫টি, ছাগল ১ লাখ ৫৫ হাজার ও ভেড়া ৬১ হাজার ১৩৩টি।

এ জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬০ হাজার। এই চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু সারা দেশে যাবে। এ বছর জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মোটাতাজা করা গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত আরাভ অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, কোরবানির জন্য জেলায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য ষাঁড়ের মধ্যে সবার নজর কেড়েছে আমেরিকান ব্রাঙ্কাস জাতের দীর্ঘকায় এই ‘ডলার’।

তিনি আরও বলেন, ডলার সিরাজগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় গরু ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয়তম হয়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছে।

আরাভ অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক জাহিদ হাসান জেমি বলেন, নাটোর থেকে ৯ মাস আগে আমেরিকান ব্রাঙ্কাস জাতের ষাঁড় ‘ডলারকে’ কিনে এনে লালনপালন করে মোটাতাজা করা হয়। ডলারকে প্রতিদিন প্রায় ১৭০০ টাকার খাবার খাওয়াতে হয়। বিশেষ জাতের এই ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে গরুর ব্যবসায়ীরা এসে ডলারের দরদাম করছে। খামার থেকে বিক্রি না হলে হাটে তোলা হবে ডলারকে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাংগ কুমার তালুকদার বলেন, আমেরিকান ব্রাঙ্কাস জাতের ষাঁড় ‘ডলারকে’ বিভিন্ন রোগের টিকাসহ প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে তদারকি করা হচ্ছে। জেলার সকল খামারে গিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। অনলাইন হাটের মাধ্যমে কৃষক ও খামারিদের পশু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল খামারিকে এজন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ডব্লিউজি/এমএইচএস

শেয়ার করুন:

Recommended For You