লম্বা ৮ ফুট। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। ওজন ৩০ মণ। চালচলন নায়কের মতো। ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান যেমন এক নম্বর হিরো। এটিও তেমন এক নম্বর ষাঁড়। এর মতো আকর্ষণীয় আর একটি ষাঁড়ও উপজেলায় নেই। তাই নাম রাখা হয়েছে শাকিব খান।
প্রতি বছরই কোরবানির ঈদে গরুর নাম নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায় সবার মাঝে। মূলত গরুর আকার-স্বভাব ভেদে এসব বিচিত্র নাম দেন খামারিরা। এবার ময়মনসিংহের গৌরীপুরে আলোচনায় রয়েছে শাকিব খান নামে গরুটি। এর দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা।
উপজেলার তেরশিয়া গ্রামের খামারি হান্নান মুন্সি চার বছরের বেশি সময় লালনপালন করে ষাঁড়টিকে বড় করছেন। এটি লম্বায় ৮ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং ওজন ৩০ মণ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলোচিত এই ষাঁড়টিকে দেখতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকাসহ দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন। এর মধ্যে কেউ কিনতে দরদাম করছেন। আবার অনেকে ষাঁড়টির সঙ্গে সেলফি তুলছেন এবং ভিডিও করছেন। এতে বিরক্ত হয়ে ষাঁড়টি দিকবেদিক ছুটোছুটির চেষ্টাও করছে।
স্থানীয় মোরশেদ মিয়া বলেন, এই ঈদে এখন পর্যন্ত শাকিব খান নামে এই ষাঁড়টিই আমাদের কাছে বড় মনে হয়। খামারি হান্নান মুন্সি অনেক কষ্ট করে এটিকে এত বড় করেছেন। ন্যায্য দাম পাবে বলে আশা করছি।
ঈশ্বরগঞ্জ থেকে ষাঁড়টিকে কিনতে আসা শরাফ উদ্দিন বলেন, আমার ইচ্ছে ও পছন্দ অনুযায়ী বড় ষাঁড় কোরবানি দেওয়ার। তাই এটিকে দেখতে এসেছি। দেখতে আকর্ষণীয় ও বড় হলেও দাম চাওয়া হচ্ছে বেশি। তাই পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর খামারিকে দাম জানানো হবে।
কথা হয় খামারি হান্নান মুন্সির সঙ্গে। তিনি জানান, এটি হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। চার বছর আগে তার খামারেই জন্ম এই ষাঁড়ের। গত দুই কোরবানি ঈদে হাটে বিক্রির চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। এবার ষাঁড়টি আকারে আরো বড়। তাই হাটে না তুলে বাড়িতেই বিক্রির চেষ্টা করছেন তিনি।
তিনি বলেন, ষাঁড়টিকে প্রতিদিন গোসল করানো হয় সাবান দিয়ে। খাওয়ানো হয় ভূসি, কাঁচা ঘাস, খড়, কলা, দানাদার খাবারসহ বিভিন্ন ফলমূল। এতে তার প্রতিদিন খরচ হয় এক হাজার টাকা।
ষাঁড়ের নাম শাকিব খান রাখার কারণ সম্পর্কে এই খামারি বলেন, এর চালচলন নায়কের মতো। ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান যেমন এক নম্বর হিরো। এটিও তেমন এক নম্বর ষাঁড়। এর মতো আকর্ষণীয় আর একটি ষাঁড়ও উপজেলায় নেই। তাই নাম রাখা হয়েছে শাকিব খান। দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজনীন সুলতানা বলেন, ষাঁড়টিকে সুস্থ রাখতে ও বড় করতে সবসময় সবধরনের পরামর্শ দিয়েছি। এটিতে কোনো রোগবালাই নেই। আমার জানামতে, এই উপজেলায় এটিই সবচাইতে বড় ষাঁড়।
ময়মনসিংহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ট্রেইনিং কর্মকর্তা সুমারী খাতুন জানান, এবার জেলায় কোরবানির জন্য ২ লাখ ২৬ হাজার ৮৯৫টি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭টি।