কক্সবাজারে ঘুর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। যদিও ঘূর্ণিঝড়ের বিপদ সংকেত এখনও বলবৎ রয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়া লোকজন বলছেন, ঘূর্ণিঝড় চলে গেছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাড়ি ফেরার নির্দেশনা দিয়েছেন, এজন্য তারা ফিরে যাচ্ছেন।
কক্সবাজার কুতুবদিয়া পাড়ার বাড়িতে ফিরতে থাকা বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে। গতকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছি। আশ্রয়কেন্দ্রে নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত বাড়ি যেতে হবে।
তারা বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদেরকে বাড়ি ফিরতে বলেছেন। এজন্য আমরা বাড়ি চলে যাচ্ছি। কারণ আশ্রয়কেন্দ্রের থাকার চেয়ে নিজের বাড়িতে থাকাই অনেক ভালো।
সাগরে বিপদ সংকেত থাকা সত্ত্বেও অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। কক্সবাজার উপকূল অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে অধিকাংশ লোকজন বাড়িতে চলে গেছেন।
তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সাগরে এখনও বিপদ সংকেত রয়ে গেছে। এ কারণে আশ্রয় নেওয়া মানুষদেরকে বাড়িতে ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরও তারা কেন চলে যাচ্ছেন জানা নেই।
এদিকে, দিনব্যাপী তাণ্ডব শেষে শান্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিন্স দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রোববার সকাল ৯টার দিকে মোখা কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। ক্রমান্বয়ে বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। দুপুরের দিকে মোখা সেন্টমার্টিন দ্বীপ এবং টেকনাফ উপকূলে তাণ্ডব চালায়। বাতাসের তীব্রতা সন্ধ্যা নাগাদ চলে। তবে সাগরে মরা কাটাল থাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়নি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান এক ব্রিফিংয়ে জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখায় জেলায় ১০ হাজার কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১২শ’ কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ঝড়ো হাওয়ায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সাবরাং এলাকায় গাছপালা উপড়ে যায়। মোখায় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে এটি একেবারেই প্রাথমিক হিসাব বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস প্রধান আবদুর রহমান জানান, রোববার সন্ধ্যার পর থেকে ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কমতে শুরু করছে। তবে আগামী দুইদিন সাগর উত্তাল এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসশনের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র এবং স্বজনদের বাসাবাড়িতে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রয় নেয়া মানুষ সংকেত কমে আসলে বাড়িতে ফিরবে।
ডব্লিউজি/এমএইচএস