ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খুলেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড। জরুরি সেবার নম্বরে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুমের নম্বর : ০১৩১৮-২৩৪৫৬০ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের নম্বর : ০১৭৭৫-৪৮০০৭৫।
এর আগে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ও সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রস্তুতিমূলক সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপজেলা ও জেলা কার্যালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো :
দেশের দক্ষিণাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আঘাত হানার আশঙ্কা থাকায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বাত্মক সতর্ক থাকতে হবে।
ঘূর্ণিঝড়কবলিত জেলাগুলোর নাজুক এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুত এলাকাবসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে/আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে হবে। জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় রেড ক্রিসেন্ট ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নিতে হবে।
ঘূর্ণিঝড়কবলিত জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করতে হবে। এসব এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারগণকে প্রকল্প এলাকায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দিতে হবে। ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকায় মজুদ জিও ব্যাগ/সিনথেটিক ব্যাগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অন্যান্য জেলা থেকৈ জিও ব্যাগ সংগ্রহ করতে হবে।
বাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি প্রবেশ করলে বাপাউবো’র পক্ষ থেকে বোতলজাত পানি এবং শুকনো খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার এবং নৌযান প্রস্তুত রাখতে হবে।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের এলাকায় বাপাউবো’র সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাইট পরিদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকার জেলা-উপজেলার সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে সার্বক্ষণিকভাবে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না।
ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকার নির্বাহী প্রকৌশলীগণ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গ নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন, যাতে প্রয়োজনের সময় জনবলসহ পর্যাপ্ত সহায়তা পাওয়া যায়। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সংসদ সদস্য পর্যায়ে অবহিত করতে হবে। গণমাধ্যমকে গৃহীত ব্যবস্থা বা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।
ঘূর্ণিঝড় পরবরর্তী অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘মোখা’ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক সভায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মল্লিক সাঈদ মাহবুবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাতের মধ্যে প্রবল ও শুক্রবারের (১২ মে) মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে।
ডব্লিউজি/এমএইচএস