ঘূর্ণিঝড়ের ‘পরিস্থিতি বুঝে’ এসএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এখন মাঝপথে। এরই মধ্যে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় “মোখা”য় পরিণত হয়েছে….। এই অবস্থায় ঝড়ের গতিপ্রকৃতি ও সার্বিক অবস্থা বুঝে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে এক বিশেষ বার্তায় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে…, রবিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এ ঝড় বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় “মোখা”র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব অঞ্চলের নিচু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার…জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়াও ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল ও ভূমিধ্বসের ঝুঁকিও তৈরি হয়।

এদিকে, বলা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাব্য দিন রবিবার, সেদিনও পরীক্ষা রয়েছে। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের পদার্থ বিজ্ঞান…., মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার কথা। পরের দিন সোমবার গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), কৃষি শিক্ষা (তত্ত্বীয়), সংগীত, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া এবং চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্বাভাস ঠিক থাকলে শনিবার রাত থেকেই ঝড়ের প্রভাব পড়বে উপকূলীয় এলাকায়। সেক্ষেত্রে রবিবারের নির্ধারিত পরীক্ষাগুলোর ভাগ্য কী হবে, সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এ বিষয়ে মাঠের পরিস্থিতি জানতে… কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর।

তিনি গণমাধ্যমটিকে বলেন, “এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আমাদের জেলা প্রশাসনও এ ব্যাপারে অবগত আছে…। দুই দিন আগে আমরা এ ব্যাপারে সভা করেছি। সেখান থেকে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে জাস্ট অ্যালার্ট আছি, যাতে কোনো কমিউনিকেশন গ্যাপ না হয়।”

এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, “অবস্থা ভয়াবহ হলে তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব…। পরীক্ষা চালু রাখা যাবে কি-না, স্থগিত করা হবে কি-না, আমাদের করণীয় কী, এসব বিষয়ে আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া থাকে, আমরা তখন জানিয়ে দেব।”

এদিকে, বৃহস্পতিবার এক বিশেষ বার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘‘মোখা”য় পরিণত হয়েছে। এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১,২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে…, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১,২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১,২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১,২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তী সময় দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে…। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ।

ডব্লিউজি/এআর

শেয়ার করুন:

Recommended For You