‘ফের ভোট ডাকাতির ছক করছে সরকার’: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, হামলা-নির্যাতন এবং পাইকারি গ্রেপ্তার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী অবৈধ সরকারের দলবাজ প্রশাসন। ভোট ডাকাতির নানা রকম কারিগরি করতে মাঠ সাজানো শুরু হয়…। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো সেই একই প্রক্রিয়ায় পুরোনো পথে হাঁটতে শুরু করেছে তারা। ইতোমধ্যে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া…, খায়রুল কবীর খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মো. মুনির হোসেন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার নিজেদের ‘তকতে তাউস’ রক্ষা করতে সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে। এখনো আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আওয়ামী আমলে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলায় সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সম্প্রতি গায়েবি মামলা দায়েরের সূত্রপাত করেছে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারের প্রশাসন।

কোনো কিছু ঘটেনি, হঠাৎ বলে দিল নাশকতা হয়েছে। নিজেরাই বোমা রেখে মামলা দিচ্ছে, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবার দেখা গেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে; যেখানে পুলিশ নিজেরাই বোমাসহ প্রবেশ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফাঁসাতে। পুলিশ যে বোমা নিয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছে…, সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে আসামি করার খেলা চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ কেউ শোনেনি, দেখেওনি। কিন্তু আসামি করা হয় মৃত ব্যক্তি ও কারাবন্দি নেতাদের। সারা দেশে চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম এই ভয়াবহ মামলাবাজি আর আটক বাণিজ্য। আমি ছোট্ট একটি উদাহরণ দিচ্ছি ঢাকার একটি থানা এলাকার চিত্র দিয়ে।

রিজভী বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে বেশ কয়েক মাস কারাগারে কাটাতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি থাকা হাজার হাজার মানুষ যেভাবে কারামুক্তির প্রহর গুনছে, একইভাবে দেশের কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ দেশে ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচার…, অবিচার, অনাচার আর গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে মুক্তি চাইছে। মাদার অব ডেমোক্রেসি খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রামের অনুপ্রেরণায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকামী মানুষের মুক্তির চলমান এই মিছিলকে গুম-খুন, অপহরণ করে কিংবা অন্যায়ভাবে জেল-জুলুম, হুলিয়া দিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত অন্যায়ভাবে বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, ইউসুফ বিন জলিল, আলী আলী আকবর চুন্নু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ হারুন…., খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি রফিক হাওলাদার, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসিফসহ শত শত নেতাকর্মী এখনো কারাগারে নির্যাতন-নিপীড়ন ভোগ করছে। সাইফুল আলম নীরবকে কারাগারের ভেতরে ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হয়েছে, এটি একটি বীভৎস নির্যাতনের নমুনা। সরকারের মদদে কারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নীরবের ওপর এহেন নির্যাতনের আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকার চক্রান্ত করে এদের জামিনে বাধা দিচ্ছে। আমি অবিলম্বে উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজ সকালে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন পৌর বিএনপির পরিচিতি সভায় পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে স্টেজ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরসহ রান্না করা খাবার লুটপাট ও নষ্ট করেছে। আমি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা…, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

ডব্লিউজি/এআর

শেয়ার করুন:

Recommended For You