আমাদের দেশের অনেক কিংবদন্তি লেখকেও জীবন, তাদের লেখা অনেক গল্প, উপন্যাস , নাটকেও উদ্ভট বয়সে প্রেমের নানা কাহিনী পাওয়া গেলেও এবার এক শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী কে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াই অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি)আক্কেলপুর উপজেলার রাইকালি উচ্চ বিদ্যলয় চলাকালীন সময় ১০ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ‘প্রেমের প্রস্তাব’ দেয়ার ঘটনায় সহকারি শিক্ষককে অবরুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম মানিক গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিদ্যালয় চলাকালীন সময় ওই বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে কৌশলে গোপনে ডেকে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানায়। পরে ওই শিক্ষার্থী ও তার মা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানায়। ঘটনাটি প্রায় ছয়দিন অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার জের ধরে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে জড়ো হতে শুরু করে ওই শিক্ষককে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করতে থাকে। গ্রামের মানুষ ও অভিভাবকরা ঐ শিক্ষককে বিদ্যলয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ, সহকারি কমিশনার ভূমি মো. ফিরোজ হোসেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।পরে অভিযুক্ত শিক্ষক শুকৌশলে পালিয়ে যান৷
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন না হলে থানা পুলিশের সহায়তায় ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ে হাজির করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পরে ওই শিক্ষককে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসতে গেলে উত্তেজিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পথরোধ করে এবং কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শুয়ে পরে। এতে সকলেই বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবরুদ্ধ হয়ে পরে। পরে সকলের সম্মতিক্রমে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি এবং অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী দশম শ্রেণির ঐ শিক্ষার্থী বলেন,গত ১ মাস থেকে আমাকে ঐ শিক্ষক নানা রকম ভাবে অন্য রকম কথা বলার চেষ্টা করতো।আমার দিকে অন্য ভাবে তাকিয়ে থাকতো। ওই স্যার আমাকে বলেন, তোমাকে ফোন দিতে বলেছিলাম ফোন দাওনি কেন? পরে ক্লাস চলাকালীন আমাকে গোপনে ডেকে নিয়ে বলে, একটা কথা বলতে চাই তুমি কথাটা কিভাবে নিবে বুঝতে পারছিনা। তোমাকে আমার খুব ভাল লাগে, তোমার সকল দায়িত্ব নিতে চাই’তোমার ভবিষ্যৎতের তৈরি আমি করে দিবো।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম মানিক এর মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ঐ এলাকার এক বাসিন্দা মানিক হোসেন বলেন, ওনারা তো পড়াতে এসেছেন। গ্রামে এত ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। ওনার ঘরেও তো মহিলারা রয়েছেন। বাচ্চা মেয়েদের এসব কী ধরণের আচরণ? আমরা ওনার শাস্তি চাইছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার বলেন, ঘটনাটি সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ওই শিক্ষককে শ্রেণি এবং বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
ডব্লিউজি/এমআর/জনি