বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়েই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ক্ষমতাবানরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন। যাদের যত ক্ষমতা তারা তত বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। কমিশন যেন এই ক্ষমতাবানদের ব্যাপারে ভীত না হয়। যেন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষ আস্থা না হারায়। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় গণমানুষের প্রত্যাশা: গণমাধ্যম ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সমন্বিত প্ৰয়াস’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
নবগঠিত ষষ্ঠ মানবিধকার কমিশনের কার্যক্রম ও করণীয় বিষয়ে জানাতে গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে কমিশন। সভায় জাতীয় মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রচলিত চিন্তাধারার বাইরে গিয়ে কাজ করতে…অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশন, এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও বিরাগভাজন হয়েছি। আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো সংস্থা হিসেবে আর থাকতে চাই না। গণমাধ্যমের সাহায্য নিয়ে আমরা সঠিকভাবে কাজ করতে চাই।
নতুন কমিশনের কাছে আগের কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চান গণমাধ্যমকর্মীরা। পাশাপাশি নতুন কমিশনের কর্মকৌশল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও কমিশনের কার্যক্রমে সরকারের প্রভাব সম্পর্কেও জানতে চান। সব শুনে মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এক মাসের বেশি সময়ে প্রায় দুইশো অভিযোগ আমরা নিয়েছি। বেশকিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করেছি। চট্টগ্রামে একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানো হয়েছিল, সেটা আগের মতো করা হয়েছে। এটা আমাদের সুপারিশে হয়েছে।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো সংস্থা হিসেবে আর থাকতে চাই না। গণমাধ্যমের সাহায্য নিয়ে আমরা সঠিকভাবে কাজ করতে চাই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ব্যাপারে আমরা সচেতন। আপনাদের দাবির সঙ্গে আমরাও একমত। তিনি বলেন, ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপারে কমিশন সচেতন। সরকারের পক্ষ থেকে এ আইন সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এজন্য অপেক্ষা করছি। প্রয়োজনে আমরা এ বিষয়ে কথা বলবো।’’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সারাবিশ্বেই মানবধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সাংবাদিকরা মানুষের জন্য কাজ করছেন। মাত্র ১৩ ভাগ মানুষ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ভোগ করেন। তারপরও আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে যাবো। অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘বিভিন্ন পর্যায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। ক্ষমতাবানরা নিজের স্বার্থে অন্যের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। যে কাউকে মেরে নিজে এগিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বজুড়েই বৈষম্য আছে।’
তিনি বলেন, গ্রামে নারী নির্যাতন, অভিবাবক নির্যাতন ও মাদকের বিস্তার ঘটছে। পরিবারিক পর্যায়ে সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। গোষ্ঠী ও কতগুলো অঞ্চলের মানুষ এখনো পিছিয়ে আছে। এসব বিষয়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইউএনবি সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাজী আরফান আশিক, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ঊর্ধ্বতনরা।
ডব্লিউজি/এআর