বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের প্রেক্ষাগৃহে বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখানোর নির্দেশনা দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে ছয়টি পূর্ণদৈর্ঘ্যসহ মোট নয়টি চলচ্চিত্রের নাম উল্লেখ রয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুসারে, শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসে প্রেক্ষাগৃহ এবং বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে চলচ্চিত্র গুলো প্রদর্শন করা হবে। সেগুলো বিনা টিকিটেই দর্শক উপভোগ করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র গুলো হলো- ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, ‘গেরিলা’, ‘আগুনের পরশমণি’ ও ‘জয়যাত্রা’। এছাড়া দেশের বিভিন্ন মিলনায়তন ও উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়’ ও ‘হাসিনা- আ ডটারস টেল’ এবং একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ওমর ফারুকের মা’ প্রদর্শন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র শাখা-১’র উপসচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতি বছরের বিজয় দিবস উপলক্ষে এই কাজটি করা হয়। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা তো সেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখেনি। তাদের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য তুলে ধরতেই সরকারের এই উদ্যোগ।’
এদিকে বিনা টিকিটে সিনেমা প্রদর্শনের বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহেও যোগাযোগ করা হয়। দেশের সবচেয়ে বড় মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানালেন, এরকম কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। তার ভাষ্য, “বিজয় দিবস উপলক্ষে নিয়মিত সিনেমা গুলোর বাইরে আমাদের হলগুলোতে চারটি বাংলা সিনেমা চলবে। এগুলো হলো ‘অনিল বাগচীর একদিন, ‘লাল সবুজ’, ‘পোস্ট মাস্টার’ ও ‘বিউটি সার্কাস’। তবে বিনা টিকিটে বা ফ্রিতে নয়, আমাদের নির্ধারিত নিয়মেই ছবিগুলো দেখতে পারবেন দর্শক।
ঢাকার শ্যামলী সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক আহসান উল্লাহর কাছেও পাওয়া গেলো একই তথ্য। তিনি বললেন, “শুক্রবার থেকে আমাদের হলে ‘দিন-দ্য ডে’ সিনেমাটি চলবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের কোনও প্রজ্ঞাপনের কথা আমরা শুনিনি। আগেও কখনও এমন হয়নি যে, বিনা টিকিটে আমরা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেছি।
কিছুটা ভিন্ন তথ্য দিলেন চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনের ব্যবস্থাপক পারভেজ। তিনি জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে অতীতে তারা বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা দেখিয়েছেন। তবে এ বছর দেখানো হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলতে পারলেন না।
সিনেমা বিশ্লেষকদের মতে, বিজয় দিবস উপলক্ষে বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা প্রদর্শন নিঃসন্দেহে চমৎকার উদ্যোগ। এর মাধ্যমে স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে যাবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, হল কর্তৃপক্ষই যখন এ বিষয়ে কিছু জানে না, সেক্ষেত্রে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগটি কতখানি বাস্তবায়ন হবে।
ডব্লিউজি/এএইচ