স্ত্রীর হাত থেকে বাঁচতে ইউক্রেনে যুদ্ধে যাচ্ছেন রুশ পুরুষেরা

রাশিয়ায় কর্তৃত্বপরায়ণ স্ত্রীদের হাত থেকে বাঁচতে অনেক রুশ পুরুষ স্বেচ্ছায় ইউক্রেনের যুদ্ধে যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন দেশটির ইয়ারোস্লাভ শাপোশনিকভ নামের এক মেয়র। তিনি রাশিয়ার কোমি প্রজাতন্ত্রের কয়লা-খনি সমৃদ্ধ ভোরকুটা শহরের মেয়র। রোববার (২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি। রাশিয়ার এই মেয়রের দাবি, ইউক্রেনের সাথে সংঘাতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা রুশ পুরুষদের এক-দশমাংশ তাদের কর্তৃত্বপরায়ণ স্ত্রীদের হাত থেকে বাঁচতে সেখানে গেছেন।

‘ওপেন ভর্কুটা’ নামক একটি অনলাইন প্যানেল আলোচনার সময় শাপোশনিকভ বলেন, ‘প্রায় ১০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবক সেখানে (ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে) যাচ্ছে কারণ তাদের স্ত্রীরা সম্ভবত শালীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে… এবং বকাঝকা করছে, বকাঝকা করছে এবং বকা দিচ্ছে।’ শাপোশনিকভ অবশ্য তার ১০ শতাংশ অনুমান কিসের ওপর ভিত্তি করে সামনে এনেছেন তা বিস্তারিত বলেননি। তবে মেয়র নিজেই ওই সভার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। আর এরপরই সেটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং ব্যাপক মিডিয়া কভারেজ লাভ করে। এতে করে ব্যাপক ব্যঙ্গ আর উপহাসের শিকার হন শাপোশনিকভ। তবে এরপরও তিনি নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেননি এবং দাবি করেছেন, মিডিয়ায় তার মন্তব্যকে প্রসঙ্গের বাইরে নেওয়া হয়েছে। মিডিয়া আউটলেট পোডিয়ামকে তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার মাতৃভূমির একজন দেশপ্রেমিক। আমি বস্তুনিষ্ঠভাবে বলতে পারি না (মন্তব্যটি) বাইরে থেকে কেমন দেখাচ্ছে। আমার কথাগুলোকে প্রসঙ্গ থেকে বের করে কেউ কেউ তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।’

তার ভাষায়, ‘আপনাকে সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখতে হবে, তবে সাধারণভাবে আমি আমার অবস্থানেই আছি: নারী সবসময় পুরুষের পেছনে থাকে এবং সমর্থন দেয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে অবশ্যই সমর্থন করতে হবে।’

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর মোটমুটি সাত মাসের মাথায় রুশ সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন।

এতে করে মস্কো ৩ লাখ পুরুষ রুশ নাগরিককে রিজার্ভ সেনা হিসেবে একত্রিত করতে চাইছে। মূলত যারা সামরিক বাহিনীতে ইতোপূর্বে কাজ করেছেন এবং যুদ্ধের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে তাদের একত্রিত করতে চাইছে রাশিয়া।

অবশ্য ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রিজার্ভ সৈন্য তলবের বিষয়ে ভ্লাদিমির পুতিনের ওই ঘোষণার পর থেকেই রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করা নিষিদ্ধ। এরপরও রাশিয়ার শহরগুলোজুড়ে বড় আকারের বিক্ষোভ করেন অনেকে। বিক্ষোভ সমাবেশ করার কারণে এক হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল রুশ কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া এড়াতে হাজার হাজার তরুণ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ড সীমান্তে দেশত্যাগের জন্য দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী, ব্যাংকার আর গণমাধ্যমকর্মীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You