আন্দোলনে জিতলে, নির্বাচনেও জেতা যায় : ওবায়দুল কাদের

এ দেশে আন্দোলনে জিতলে, নির্বাচনেও জেতা যায় বলে মন্তব্য করেছেন,আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের । বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে ‘পিতার শোক, কন্যার শক্তি, বাংলার অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন গবেষক, ইতিহাসবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোথায় আপনাদের আন্দোলন? আন্দোলনের সোনার হরিণ তো দেখা দিলো না। আন্দোলনের সোনার হরিণ দেখা না দেখা দিলে, ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন কখনও দেখা দেবে না। আন্দোলনে জয় নিয়েই নির্বাচনে যেতে হয়। ১৩ বছর ধরে দেখছি– কোরবানির ঈদের পর, রোজার ঈদের পর আন্দোলন করবেন। দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর যায়; পদ্মা-মেঘনার কত পানি গড়িয়ে যায়; কিন্তু আপনাদের আন্দোলনের সোনার হরিণের দেখা পাওয়া যায় না। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দিল্লী দুরস্ত। এখনও অনেক দূরে।’

প্রধানমন্ত্রী মানুষের মুক্তির জন্য লড়ে যাচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব কষ্ট প্রকাশ করে কী করবেন? শেখ হাসিনাকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনি ভাগ্যবতী। আল্লাহ এ দেশে একজনকে সৃষ্টি করেছেন স্বাধীনতার জন্য। আরেকজনকে মুক্তির জন্য। শেখ হাসিনা মানুষের মুক্তির জন্য লড়ে যাচ্ছেন। পদ্মা ব্রিজ নিয়ে অনেক অপপ্রচার হলো। সেটি এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। আপনাকে বলবো, পদ্মা ব্রিজ দেখে যাবেন। যেতে তো হবেই, কারণ সামনে নির্বাচন। যতই বলেন, আমরা বুঝি ভেতরে বিশাল মনোনয়ন বাণিজ্য আছে।’

অনেকে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বানিয়ে দিতে চাই উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এখনও চল্লিশের কাছাকাছি আমাদের রিজার্ভ। ৪০-৩৯ কাছাকাছি ওঠা নামা করেছে। গত ছয় মাসে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, এর আগের কখনও ছয় মাসে এই পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির মূল্য দিতে হচ্ছে আমাদের। রাত দিন জেগে প্রধানমন্ত্রীকে মানুষের কথা ভাবতে হচ্ছে। সরকার প্রধান হয়ে তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। এই কষ্ট দূর করতে তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অবশ্যই সুদিন আসবে।’

একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পলাশীর আম্রকাননের পুনরাবৃত্তি পঁচাত্তরের এই হত্যাকাণ্ড। সেখানে মীর জাফরের ভূমিকায় খন্দকার মোশতাক, সেনাপতি রায় দূর্লভের ভূমিকায় সেনাপতি জিয়াউর রহমান। কিউবার কাছে পাট বিক্রি করার কারণে নিক্সন কিসিঞ্জাররা মাঝ পথ থেকে খাদ্য সহায়তা ফিরিয়ে নিয়ে খাদ্য সঙ্কট তৈরি করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধু। অনেকে আছেন, ওপরে মুক্তিযোদ্ধা ভেতরে পাকিস্তানি দোসর। এমন একজন হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। আমি বলবো, জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাহস পেতো না। জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড শেষে মেজর ডালিমকে বলেছিলেন ‘‘ওয়েল ডান! মেজর ডালিম। ইউ হ্যাভ ডান এ গ্রেট জব!’’ মীর জাফর তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বাংলাদেশে খন্দকার মোশতাকও তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এটাই ইতিহাস। কেন খুনিদের বিচার করা যাচ্ছে না? কারণ, কানাডা তাদের ফেরত দিচ্ছে না। আমরা তাদের অনুরোধ করবো, খুনিদের ফেরত দিন। এটা বাংলার মানুষের দাবি।’

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *