এএসপি মহরম আলী: দুধ কলা দিয়ে সরকারের কাল সাপ পোষা?

১৫ই আগষ্ট বরগুনার ঘটনাটি ছিল একটি অনভিপ্রেত। যা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দেশের সাধারণ মানুষ মোটেও ভালো ভাবে নেয়নি। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে পুরো ঘটনাটি। আর এই মুল ঘটনার যিনি হিরো ছিলেন তিনি ৩০ বিসিএস এর পুলিশ ক্যাডার মহরম আলী। তার আরো একটি পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে জানা গেছে। তা হলো, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ক্যাডার ছিলেন মহরম আলী, ক্যাম্পাসে মাসুদ ভাই নামে পরিচিত ছিলেন বেশি। ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদলের প্রত্যেকটা মারামারিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রদলের ক্যাডার হিসেবে।

মহরম আলীর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ষোলগড় গ্রামে বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বাবার নাম বাচ্চু মিয়া, যিনি বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী। তার চাচাসহ পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জীবনে কোন দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি এবং নৌকায় ভোট পর্যন্ত দেয়নি। এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে তবে কিভাবে বহাল তবিয়তে দাপটের সঙ্গে চাকরি করেছেন? সেই প্রসঙ্গে যাবো না। মহরম আলীর বিষয়ে আরো জানা যায়, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে মহরম আলী সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। বিশেষ করে বরগুনা সদর উপজেলার ৫ নং আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন এবং ৬ নং বুড়ির চর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নানান রকমের হুমকি এবং ভয়ভতি দেখাতে বেশ সুনাম ছিল মহরম আলীর। সেই নির্বাচনে মহরম আলীর নেতৃত্বে অল্প ভোটের ব্যবধানে নৌকার পরাজয় ঘটে। এরপর থেকেই মহরম আলী স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে এক আতংকের নাম। তিনি গাড়ি নিয়ে বের হলে শহরের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তটস্থ থাকতেন।

এসব ঘটনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় মহরম আলীর মত এরকম বহু মহরম আলীকে তৈরি করে রাখা হয়েছে। যারা সরকারের দুর্দিন দেখলেই খোলশ পাল্টে স্ব রূপে ফিরে যাবেন। একজন সিনিয়ার এমপির সঙ্গে যে ধৃষ্টতা মহরম আলী দেখিযেছেন তা গোটা দেশের মানুষ ফেসবুকের মাধ্যমে দেখেছেন। হতবাক এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নানা মহল। ১৫ই আগষ্ট ওই ঘটনার পরে শহর জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে তটস্থ হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শহরে শহরে পুলিশের তল্লাসী এবং টহল জানান দিচ্ছিল আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ পেলেই আটক। ঘটনার সময় মহরম আলীর গায়ে কোন পুলিশি পোশাক ছিল না। এমনকি ১৫ ই আগষ্ট শোক হিসেবে তিনি নীল টিশার্ট পড়ে বের হয়েছেন। তবে মহরম আলী কি পরিকল্পনা নিয়েই বের হয়েছিলেন এমন মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

বিশ্লেষকরা আরো মনে করছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখনো দেশ চলছে। দেশের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি যেখানে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিতে সরকার চেষ্টা করছে, সেখানে একজন এডিশনাল এসপি হয়ে অশান্ত পরিবেশ তৈরির পায়তারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে মরহম আলীর এতা ধৃষ্টতা এলো কোথা থেকে? এই প্রশ্ন এখন জনেমনে। যদিও ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টের ওপর পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহণ হবে মহরম আলীর বিরুদ্ধ। তারপরেও বিএনপি জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় মহরম আলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না হলে ছাত্রলীগের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *