সাতক্ষীরা উপকূলে জলোচ্ছ্বাস আতংক; ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ

উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় নিম্নচাপের কারণে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি অব্যহত রয়েছে। এতে ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার নদীতে ৩ থেকে ৪ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলায় সকাল থেকে হালকা থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় নদীর পানি বেড়েছে। রবিবার সকালে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার ও অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ- সোনাতনকাটি, শ্রীপুর কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ ও উত্তরে, মাদার বাড়িয়া ঝাপালিয়া, বন্যতলা ক্লোজারের পশ্চিম অংশে। বেড়িবাঁধে এমার্জেন্সি কাজ হবে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

সাতক্ষীরার প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী (রিপন) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও উপকূলীয় নদীতে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১-২ দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, এক ও দুইয়ের আওতায় ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে উপকূল জুড়ে থাকা ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। পাউবো-২ এর আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলে ৪০০ কিলোমটিার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। এবং পাউবো-১ এর আওতায় ৩৮০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৪২ কিলোমিটার।

স্থানীয়রা জানায়, ‘জেলার শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার এলাকার নাপিতখালি, গাবুরা, জেলেখালিসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতোমধ্যে নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি উঠছে। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম জানান, সকাল থেকে হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ জাকির হোসেন জানান,‘ কপোতাক্ষ নদী সংলগ্ন কুড়িকাউনিয়া, শ্রীপুর, রুইয়ের বিল, সুভদ্রা কাটি, সনাতন কাটি, হরিশখালি বন্যা তলা সহ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদীতে প্রচুর পরিমাণে জোয়ারের পানির বৃদ্ধির ফলে যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে প্রতাপনগর ইউনিয়ন আবারও তলিয়ে যেতে পারে। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে দিনপাত করছেন প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৩৬ হাজার মানুষ।’

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের ও পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো)-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, ‘৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে অধিক ঝুঁকিতে রয়েছেউপকূল জুড়ে থাকা ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। তারা আরও জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকায় মেরামত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া বাকি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *