বসবাস করেন ভারতে, কলেজ শিক্ষকের চাকুরী ও বেতন বাংলাদেশে!

স্বপরিবারে ভারতে বাস করেও সরকারি তহবিলের বেতন-ভাতাসহ সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক বিশ্বনাথ দত্তের বিরুদ্ধে। প্রায় ৫ বছর অনিয়মিত এই সহকারী অধ্যাপক, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজশে প্রতি মাসেই তুলেছেন বেতন। এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকেও।

১৯৮৮ সালে পাবনার বেড়া উপজেলার মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বিশ্বনাথ দত্ত। ১৯৯৩ সালে সরকারী বেতনের জন্য এমপিও ভুক্ত হয় তার নাম। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন ৪০ হাজার ৩৫৩ টাকা। নিয়মিত উপস্থিতি ও দায়িত্ব পালন সাপেক্ষে এ বেতন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত ৫ বছর ধরে কলেজে অনিয়মিত তিনি। কলেজ সূত্র জানায়, গত এক বছর ধরে স্বপরিবারে স্থায়ীভাবেই ভারতে বাস করছেন তিনি। তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে দেখা না গেলেও, প্রতিমাসেই ব্যাঙ্ক থেকে উত্তোলন করা হয়েছে বেতন। অভিযোগ উঠেছে, বেতন গ্রহণ ও উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর জাল করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম বিশ্বাস ও বিশ্বনাথ দত্তের ভাই সুনিল দত্ত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ ধরে রাখার অভিযোগও আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি অনুসন্ধানে, মাসুমদিয়া ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজে গেলে নানা অজুহাতে উপস্থিতি ও বেতন গ্রহণের রেজিস্টার দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। বিশ্বনাথ দত্তের ব্যাংক প্রতি মাসে বেতনের অর্থ উত্তোলনের প্রমাণাদি উপস্থাপন করলে, একপর্যায়ে জাল সাক্ষরের বিষয়টি স্বীকার করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বিশ্বাস। তবে, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির মতামত নিয়ে মানবিক কারণে এ কাজ করেছেন বলে দাবি তার। এবিষয়ে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ জানান, বিশ্বনাথ দত্তের অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে দ্রুতই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সবুর আলী জানান, বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাকুরিবিধি অনুযায়ী কোনো শিক্ষকের এক বছর ছুটিতে থাকার সুযোগ নেই। মেডিকেল ছুটি নিলেও বেতন-ভাতা গ্রহণ দন্ডনীয় অপরাধ, জানিয়েছে শিক্ষা বিভাগ।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *