বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক হারে বাড়লেও বিশ্ববাজারে কমেছে। বাংলাদেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম বেড়েছে ৫১.৬৮%, প্রতি লিটার কিনতে গুনতে হবে ১৩৫ টাকা। শুক্রবার (৫ আগস্ট) মধ্যরাতের পর থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কমছে। শনিবার আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৯০ ডলারেরও নিচে নেমে এসেছে। খবর রয়টার্সের। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে এক পর্যায়ে ব্যারেল প্রতি ১৩৯ ডলারে উঠেছিলো।
অয়েল প্রাইস ডটকম বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দুই ধরনের অপরিশোধিত তেলই এখন ১০০ ডলারের কমে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ৮৮ ডলার ৫৪ সেন্টে বিক্রি হয়েছে। অপরদিকে ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেল বিক্রি হয়েছে ৯৪ ডলার ১২ সেন্টে। গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের পর এবারই সবচেয়ে দ্রুত তেলের দাম কমছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে আবারও করোনার বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় কারণে তেলের চাহিদা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। ফলে গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসছে জ্বালানি তেলের দাম। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম এক সপ্তাহেই কমেছে ১০ শতাংশ।
লিবিয়া থেকে তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চীনে অর্থনৈতিক কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে, ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক দেশটির আমদানিও হ্রাস পেয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে তেলের দাম বেশি থাকায় বিপাকে পড়েছিল আমদানিকারক দেশগুলো। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অর্থনীতিতেও ব্যাপক চাপ পড়ে। উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র দেশগুলোর ফরেন কারেন্সির রিজার্ভ ফাঁকা হয়ে আসে তেল আমদানি করতে গিয়ে। এর প্রভাব পড়ে অন্য পণ্যের মূল্যেও। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির পারদ ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে যায়। জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। যা ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ।
বেশ কিছুদিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল। মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল।
তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অল্প অল্প করে কমছিল। এবার সেটি প্রায় যুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
ডব্লিউজি/এমএ