লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের উদ্যোগে শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উৎযাপন

লক্ষ্মীপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে ৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিশিষ্ট ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি সংগঠক বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বায়েজীদ ভুঁইয়ার পক্ষ হতে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল ও তবাররক বিতরণ ও বৃক্ষরোপন করা হয়।

শুক্রবার জেলার স্থানীয় একটি মসজিদে দোয়া ও কুরআন খতমের আয়োজন করা হয়। পরে সবার মাঝে তবারক বিতরন করা হয়। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে প্রায় ২হাজার গাছের চারা বিতরণ করেন বায়েজীদ ভূইয়া। প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বায়েজীদ ভূইয়া বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার (৫ আগস্ট)। তিনি ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাতবরণ করেন তিনি। নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের প্রথম শিকার হন শহীদ শেখ কামাল। ঘাতক বজলুল হুদা স্টেনগানের গুলিতে তাকে হত্যা করে।

২০২১ সাল থেকে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। সরকারের ‘ক’ শ্রেণিভুক্তি দিবস হিসেবে ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ‘শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী’ রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের অবদানকে স্মরণীয় রাখার লক্ষ্যে এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ জন্মবার্ষিকীতে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২’ প্রদান করা হচ্ছে। শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান শেখ কামাল। এরপর তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।

বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। তিনি ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। শহীদ শেখ কামাল ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করাতেন।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *