ইলিশে সয়লাব বাজার; বরফ সংকটে ব্যবসায়ীরা

মাছ ধরার উপর পয়ষট্টি দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। তাই জেলে, শ্রমিক, ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে সরব পুরো মৎস্য বন্দর। বেঁচাকেনা চলছে হরদমে। দিন রাত কর্মব্যস্ততা মৎস্য আড়ৎ গুলোতে। সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পরায় খুশি আড়ৎদার ও জেলেরা। মাছের চড়া দাম থাকায় হতাশা প্রকাশ করলেন পাইকারী ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এদিকে বরফ সংকটের কারণে অনেক মাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে। তবে ঘনঘন বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কারণে চাহিদামত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বরফের কিছুটা সংকট রয়েছে বলে বরফ কল মালিকরা জানিয়েছেন।

গত কয়েক দিন আগেও যেখানে ছিল সুনসান নীবরতা, সেই মৎস্য বন্দর মহিপুর আলিপুরে এখন মানুষের কোলাহলে মুখরিত। গভীর সমুদ্র থেকে একের পর এক মাছ ধরা ট্রলার বোঝাই হয়ে আসছে মাছ। আর টুকরিতে করে শ্রমিকরা মাছ তুলে নিয়ে যাচ্ছে আড়তে। সেই মাছ বিক্রি করছেন আড়ৎ মালিকার। ক্রয়কৃত মাছ প্রক্রিয়াজাত করে ক্রেতারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। এসব আড়ৎ ঘাটের সামনে মাছ পরিবহনের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক ও পিকআপ।

জেলে ও স্থানীয়রা জানান, সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জাল ফেলে এফ বি মুরছালিন ১২০ মন, এফ বি প্রিন্স ১৮০ মন, এফ বি আব্দুল সত্তার ১৫০, এফ বি মফিজ ৭৫ মন, এফ বি খালেক ৯৫ মন, এফ বি তামান্না ট্রলারে ১০ মন মাছ পেয়েছে। এসব মাছ তারা স্থানীয় আড়তে বিক্রি করেছেন। তবে বড় সাইজের মাছ ৪৮ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মাঝারি সাইজের মাছ ২৪ থেকে ২৫ হাজার ও ছোট মাছ সাইজের মাছ ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

এফবি জুবায়ের ট্রলারের মাঝি আনিসুর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে গিয়ে প্রথম বারের মত জাল ফেলে তিন লাখ বার হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন। তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় বাজার করে নিয়ে আবারো মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে রওয়ানা করবেন বলে তিনি জানান। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ি মো.মনির হাওলাদার বলেন, এক সময় ফেড়ি যোগাযোগের জন্য গন্তব্যে পৌঁছাতে অপেক্ষা করতে হতো র্দীঘ সময়। ফেরিঘাটে যানজটে আটকা পড়ে নষ্ট হয়ে যেত অনেক মাছ। এখন এই মৎস্য বন্দরে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই পদ্মা সেতু পাড় হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মৎস্য বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে দক্ষিনের সামুদ্রিক মাছ।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে কিনারে তেমন ইলিশ পড়ছেনা। তাই ছোট ছোট ট্রলারের জেলেরা আশানুরুপ মাছ পাচ্ছেনা। এছাড়া সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর জেলেদের জালে প্রচুর পরিমানে মাছ ধরা পরায় জেলে, ব্যবসায়ি, শ্রমিকদের মাঝে অনন্দ বিরাজ করছে।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *