ইবিতে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের মারধর ও সিট বাণিজ্যের অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলে উঠা নিয়ে মধ্যরাতে হতে সকাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কয়েক দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে শনিবার রাতে হলে উঠা নিয়ে এ হট্টগোল হয়েছে। হলের উত্তর ব্লকের ৪০৩ নাম্বার কক্ষকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, হট্টহোলের সে কক্ষে বৈধ দুই শিক্ষার্থী বাহিরে অবস্থান করায় ঐ কক্ষে নবীন এক শিক্ষার্থীকে তুলতে চান ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে সে কক্ষে পূর্ব থেকেই থাকতেন ছাত্রলীগ কর্মী অর্থনীতি বিভাগের শাকিল। তিনি ওই সিটে দুজন অতিথি রেখেছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ১১ টায় ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজ ওই কক্ষে অতিথি হিসেবে থাকা শিক্ষার্থীদের বের করে দিতে চাইলে প্রতিবাদ করেন শাকিল। এ নিয়ে কক্ষের সামনে কিছুক্ষণ হট্টগোল হয়। সেই হট্টগেল করতে করতে এ পর্যায়ে মোস্তাফিজ ও তার সহযোগীরা শাকিল ও অতিথিদের মারধর করেন বলে শাকিললা চিল্লাচিল্লি করছিলো। এ ঘটনা জেরে ভোররাত পর্যন্ত কয়েক দফায় শাকলদের মারধর করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ ওই কক্ষের সিটের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা না থাকায় শাকিল ও তার কয়েকজন বন্ধু কক্ষে নিয়মিত বসবাস করেন । তার বন্ধু সিনহা, জ্যোতি, বন্ধনসহ অন্য হল থেকে কয়েকজন এসে হট্টগোল করেন। আমরা এটি রোধে করতে নতুন একজনকে তুলতে চেয়েছিলাম। এতে ওদের সমস্যা হবে, এ জন্য বাধা দেয়। একপর্যায়ে বাক্‌বিতণ্ডা হয়েছে। আর ৩টার দিকে চা খেয়ে ওপরে আসার সময় আবার বাক্‌বিতণ্ডা শুরু করলে বাকি ঘটনা ঘটে।’

মারধরের শিকার ছাত্রলীগ কর্মী শাকিলের অভিযোগ, মোস্তাফিজ দীর্ঘদিন ধরে সিট বাণিজ্য করে আসছে। রাতে হলের করিডরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মোস্তাফিজ এসে তাকে হুমকি-ধমকি দেন ও এই সিটে সিনিয়াররা না থাকায় জোরপূর্বক সিট বাণিজ্য করায় সিটে তুলে দিতে আসেন। একপর্যায়ে তাদের চড়-থাপ্পড় দেন ও মারধর করেন। এ সময় ছাত্রলীগকর্মী ইসতিয়াক আহমেদ শাওন, মিরাজুল ইসলাম, আশিক, রাসেল ও রাফি মোস্তাফিজের সঙ্গে থেকে মারধরে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ শাকিলের।

পরে লালন শাহ হল ও অন্যান্য হল থেকে আসা শাকিলের বন্ধুরা রেগে গেলে মোস্তাফিজ লুকিয়ে পড়েন। এ সময় ওই হল ও অন্য হল থেকে আসা ছাত্রলীগের সিনিয়ররা তাদের শান্ত হতে বললে শাকিলরা কক্ষে ফিরে যায়। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খান ও আলামিন জোয়ার্দার এলে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে দিনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান। ততক্ষণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকতে অনুরোধ করেন। সকালে ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টোরিয়াল বডি আসেন। শাকিল তাদের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল বডি ও উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের আশ্বাস দিলে উভয়ে শান্ত করেন।

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সময় প্রক্টরিয়াল বডি হলে এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরে হল প্রশাসন আলোচনা করবে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসব।’

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *