খুলনায় ইজিবাইক প্রতিদিন গিলে খাচ্ছে তিন লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ

খুলনা মহানগরীতে বৈধ-অবৈধ ইজিবাইকে প্রতিদিনের বিদ্যুৎ চাহিদা সোয়া তিন লাখ ইউনিট।  ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের যে সিদ্ধান্ত তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলছেন, সংশ্লিষ্টরা।

একটি ইজি বাইকে প্রতিদিন চার্জ দিতে আট থেকে নয় ইউনিট বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে সাড়ে আট হাজার ইজিবাইকের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন ৭৬ হাজার ৫০০ ইউনিট। কিন্তু নগরীতে সাড়ে আট হাজার ইজিবাইকের স্থানে চলে ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ হাজার ইজিবাইক।

এই পরিমান ইজিবাইকের জন্য বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ১৫ হাজার ইউনিট। এছাড়াও রয়েছে ইজি রিক্সা, মটর চালিত ভ্যান যার কোন হিসাব নেই কারো কাছে।

ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য যে নির্দেশনা দিয়েছে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেখা দেবে সংশয়। ইজিবাইকের চালকরা বলছেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অবৈধ ইজবাইক চালাচল বন্ধ করতে হবে । আর ইজবাইক চার্জ পয়েন্ট মালিকদের দাবি, অবৈধ ইজিবাইক যেমন বন্ধ করতে হবে তেমনি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ করেত হবে।

নগরীর আলীর ক্লাবে অবস্থিত সিয়াম চার্জিং পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১৫ থেকে ২০টি ইজিবাইকের চার্জ হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ইজিবাইক আসছে চার্জ করতে আবার চার্জ শেষে বরে কয়ে নিয়ে যাচ্ছেন চালকেরা।

 

এসময় মোঃ ইলিয়াস বলেন, ইজিবাইকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়। এতে আট থেকে নয় ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়।

সরকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নির্দেশনার কথা বলতেই, পাশ থেকে অপর ইজিবাইক চালক মহিউদ্দিন বলে ওঠেন, আমরা সিটি কর্পোরেশনকে টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালায়। কিন্তু শহরে অবৈধ ইজিবাইক চলে বৈধ ইজিবাইকের থেকে তিন থেকে চার গুণ বেশি।

খুলনায় বলা হয় সাড়ে আট হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স আছে। কিন্তু গাড়ী চলে ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ হাজার। অবৈধ গাড়ি বন্ধ হলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বলছেন তারা।

ইজিবাইক চার্জিং পয়েন্ট সিয়ামের ম্যানেজার মোঃ তারেক আরো  বলেন, চার্জিং পয়েন্টগুলোর মধ্যে অনেকেই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে চার্জ দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় ও গোপনে এই কার্যক্রম চলছে। এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে।

নাগরিক নেতৃবৃন্দ বলছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অজানা কারণে ইজিবাইক বন্ধ হচ্ছে না নগরী ও মহাসড়কে। প্রতিনিয়ত রাস্তার দূর্ঘটনা যেমন ঘটছে তেমনি তৈরী হচ্ছে জ্যাম। এখন তো রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে  জ্বালনী ও বিদ্যুৎ সংকট লাঘবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই অবৈধ ইজিবাইক, রিক্সা, ইজিভ্যান বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে নগরীতে বিকল্প গণপরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিকল্প গণপরিবহনের ব্যবস্থা না করে ইজিবাইক বন্ধ করা সহজ হবে না বলছেনও তারা।

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *