বাবার ইচ্ছে পূরণে এতিমদের জন্য মাদরাসা বানালেন তরুণ উদ্যোক্তা

বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল ছেলেকে হাফেজ বানাবেন। কিন্তু গ্রামে তেমন কোনো মাদরাসা না থাকায় সেই সুযোগ হয়নি। তাই ভর্তি করানো হয় স্কুলে। স্কুল থেকেই কম্পিউটারের প্রতি তার ছিল ব্যাপক নেশা। হয়েছেন আইটি ইঞ্জিনিয়ার। ঢাকায় ‘ই-পার্ক’ আইটি লিমিটেড ও ই-চেন্স ল্যাব নামে তার দুটো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে বিপ্লবের গ্রামের ৫০জন ও সারাদেশের প্রায় দুই শতাধিক তরুণ চাকরি করছেন।

তার নাম মেজবা উদ্দিন বিপ্লব। বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বৈরাতি গ্রামের কেইউপি বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত সহির মোল্লা। কিছু দিন আগে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার আগে স্ত্রীকে বলে যান, ছেলে যেন অসহায় শিশুদের জন্য একটি এতিমখানা তৈরি করেন। যেখানে সব টাকা খরচ করবে ছেলে নিজেই। সেই স্বপ্ন পূরুণ করতে হাতে নেন পরিকল্পনা। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে।

শনিবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় হাজী রেফাজ উদ্দিন-সহির মোল্লা হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। এ সময় প্রতিষ্ঠাতা তরুণ ইঞ্জিনিয়ার মেজবা উদ্দিন বিপ্লব সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, তিস্তার কোলঘেঁষে এই এতিমখানাটি এক দিন অনেক বড় হবে। এখানে ইসলামসহ সব ধরনের শিক্ষায় আলোকিত হবে শিশুরা। আমি এই তরুণ উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার বিপ্লবকে ধন্যবাদ জানাই।

তরুণ উদ্যোক্তা মেজবা উদ্দিন বিপ্লব বলেন, নিজের চেষ্টায় আজ আমি এতদূর এসেছি। কখনো ভাবিনি দেশের বাইরের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার তৈরি করে দিতে পারব, নিজের প্রতিষ্ঠানে ছোট ভাইদের চাকরি দিতে পারব। চেষ্টা না থাকলে আসলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। বাবা-মায়ের পাশাপাশি নিজের চেষ্টা ছিল এক দিন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব, যেখানে এতিম শিশুরা খরচ ছাড়াই পড়াশুনা করবে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কাজটি করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।

বিপ্লব আরও বলেন, নিজের ৬০ শতক জমিতে ৪০ জন এতিম শিশুর জন্য প্রথমে ব্যবস্থা করা হবে। পরে আসন আরও বাড়ানো হবে। শিশুরা এখানেই থাকবে, খাবে, পড়বে। তাদের পুরো খরচ বহন করবে মাদরাসা কমিটি।

হাজী রেফাজ উদ্দিন-সহির মোল্লা হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কালীগঞ্জ থানার ওসি এটিএম গোলাম রসূল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেফাজ রাঙা, কালেরকন্ঠের সাংবাদিক হায়দার আলী বাবু, বাবর আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, প্রমুখ।

ডব্লিউজি/এএইচ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *