বৃষ্টিও বাঁচাতে পারল না বাংলাদেশকে

নুরুল হাসান সোহানের একার লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কেবল ইনিংসে পরাজয়ের লজ্জা থেকে বাঁচা। সোহানের অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ পায় মাত্র ১২ রানের লিড। এই কিঞ্চিৎ রান তুলতে ক্যারিবীয়দের খেলতে হয় মাত্র ১৫ বল। ০ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশকে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই হারের মধ্য দিয়ে ১০০টি টেস্ট ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে বৃষ্টির জন্য খেলা হয়নি কয়েক ওভার। চতুর্থ দিনে তো প্রথম সেশনের খেলাই হয়নি, দ্বিতীয় সেশনেরও অনেকটা সময় যায় বৃষ্টির পেটে। কিন্তু তাতেও ম্যাচটা বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ।

অ্যান্টিগায় সিরিজের প্রথম টেস্টেও একই হাল হয়েছিল বাংলাদেশের। ইনিংসে পরাজয়ের খুব কাছে থেকে ঘুরে দাঁড়ায় সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে। সেইন্ট লুসিয়াতে এসেও ভাগ্য বদলায়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে অধিনায়ক সাকিব পেসারদের নিয়ে উচ্ছ্বসার কথা জানালেও ব্যাটারদের নিয়ে জানিয়েছেন, চিন্তিত নন। তবে মনে করিয়ে দিয়েছেন, মানসিকভাবে শক্ত হবার কথা।

সাকিব যেমনটা বলেছেন, আমি ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত নই। আমাদের মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। ফাস্ট বোলিংয়ে গত ৩-৪ বছরে আমরা সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছি। সাকিব আল হাসান ব্যাটারদের নিয়ে চিন্তিত না হবার কথা শোনালেও গোটা সিরিজে ব্যাটিংটাই যে দলকে ডুবিয়েছে সেটা প্রমাণিত। সেইন্ট লুসিয়াতে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ব্যাটে শুরুটা দারুণ হলেও আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের ১০ রানে ফেরার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিপর্যয়।

অ্যান্টিগার মতো সেইন্ট লুসিয়াতেও ছিল ক্যারিবীয় পেসারদের আধিপত্য। নাজমুল হোসেন শান্ত (২৬), এনামুল হক বিজয় (২৩), সাকিব আল হাসান (৮), নুরুল হাসান সোহান (৭), মেহেদী হাসান (৯) ব্যর্থ হলেও দলের বিপাকে লিটন দাস খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। শেষ দিকে এবাদত হোসেনের অপরাজিত ২১ রান ও শরিফুল ইসলামের ২৬ রানে ভর করে ২৩৪ রান করে বাংলাদেশ।

ক্যারিবীয়দের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন জ্যেডেন সিলস ও আলজারি জোসেফ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবীয় ব্যাটাররা দেন ধৈর্যের পরীক্ষা। একটা সময় দ্রুত উইকেট হারালেও কাইল মায়ার্সের ১৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে ৪০৮ রান তুলে ১৭৪ রানের লিড নিয়ে শেষ করে ইনিংস। খালেদ আহমেদ নেন ক্যারিয়ারের প্রথমবার ৫ উইকেট। এছাড়া মেহেদী হাসান ৩টি ও ২টি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম।

তৃতীয় দিনে ১৭৪ রানের লিড টপকাতে নেমে শুরুতেই খেই হারায় বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ৪ রান করে ফেরেন কেমার রোচের বলে ক্যাচ দিয়ে। তামিমকে ফিরিয়ে রোচ পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ২৫০তম উইকেট।

তামিমের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত একপাশ আগলে রাখলেও বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়ে টপ আর মিডল-অর্ডার। তৃতীয় দিনে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হবার আগে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রান তুলে শেষ করে দিন। দুই অপরাজিত ব্যাটার সোহান (১৬) ও মেহেদী মিরাজ চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নামলেও মাত্র ৪ রান করে বিদায় নেন মিরাজ। ইনিংসে হারের শঙ্কা যখন জেঁকে বসে তখন সোহানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে লজ্জা এড়ায় বাংলাদেশ।

৫০ বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় সোহান ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ১৮৬ রান তুলে ১২ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। উইন্ডিজের পক্ষে ৩টি করে উইকেট কেমার রোচ, আলজারি জোসেফ ও জ্যেডেন সিলস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের ৪ ও জন ক্যাম্পবেলের ৯ রানে ২.৫ ওভারেই ১০ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ক্যারিবীয়রা।

ডব্লিউজি/এএইচ

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *