দেশের অর্থায়নে নির্মিত বাঙালি জাতির সপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ শেষ। আগামী শনিবার (২৫ জুন) সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে (সেতু উদ্বোধন) প্রায় দশ লক্ষ মানুষের জন্য ১৫ একর জায়গা জুড়ে চলছে জনসভার প্রস্তুতি। সভাস্থলে নারী, ভিআইপি অতিথি, বিদেশি অতিথি ও কূটনৈতিকদের জন্য জন্য তৈরি করা হয়েছে আলদা আলদা জোন। স্মরণকালের সেরা এই জনসভার আয়োজনের জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, অপেক্ষায় দেশবাসী।
সেতু উদ্বোধনের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। মঞ্চের সামনে পানিতে ভাসমান অবস্থায় থাকছে বিশাল এক নৌকা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে পদ্মা সেতুর পাশ দিয়ে চলছে বড় এক নৌকা। জনসভায় আসা মানুষের কাছে দূর থেকে জীবন্ত মনে হবে দৃশ্যটি। ১১টি পিলারের ওপর ১০ টি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ব্যতিক্রমী এই মঞ্চ। মাদারীপুর জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দশ লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ১৫ একর জায়গাজুড়ে চলছে প্রস্তুতি। প্রস্তুতির ৯০ ভাগ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত পুরো কাজও শেষ হবে। জনসভার জন্য তৈরি করা হয়েছে ১৫০ ফিট দৈর্ঘ্য একটি বিশাল মঞ্চ। দশ লক্ষাধিক মানুষের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী ৫শত টয়লেট, ভিআইপিদের জন্য থাকছে ২২টি আলাদা টয়লেট। রয়েছে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। সুপেয় পানির জন্য থাকছে অসংখ্য পানির ট্যাপ। তিনটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল, সভাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানের দর্শকদের জন্য থাকছে ২৬টি এলইডি মনিটর, ৫০০ মাইকসহ অত্যাধুনিক সাউন্ডসিস্টেম।
জানা গেছে, জনসভাস্থলের তিন বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ চলমান রয়েছে। বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে ইতোমধ্যেই। পুরো এলাকার নিরাপত্তার জন্য রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনসভাস্থলে আগত জনসাধারণের জন্য বিশ শয্যার ১টি এবং ১০ শয্যার ২টি ভ্রাম্যমান চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে জনসভাস্থলের পুরো কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন জনসভাস্থল নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা পিয়ারু সরদার অ্যান্ড সন্স এর ব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক। তিনি জানান, আমাদের আর ১০ ভাগ কাজ বাকি। খুব দ্রুতই কাজ শেষ করা হবে। স্মরণকালের সেরা একটি জনসভা হবে এটি। সেই ভাবেই সব প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জনসভাস্থল এবং নৌপথে আমাদের শতাধিক ফায়ারম্যান নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে আমাদের ফায়ারম্যান।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন,পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী এই জনসভায় কমপক্ষে দশ লাখ লোকের সমাগম হবে। অনুষ্ঠানে আসা এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য আমরা সকল ধরনের সুবিধা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। পানি থেকে শুরু করে চিকিৎসাসহ সকল ব্যবস্থা থাকছে। জনসভাস্থলে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্রে সকল ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। আর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা তো থাকছেই।
ডব্লিউজি/এএইচ