প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধস ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে আরও বেশি মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দুর্গত অঞ্চলে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব অঞ্চলে এ পর্যন্ত ১৩১ জন নিহত হয়েছে।
আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএসডিএমএ) জারি করা বুলেটিনে বলা হয়, সোমবার রাজ্যের ৩২টি বন্যা-আক্রান্ত জেলার মধ্যে আটটিতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য পাঁচ জেলায় দুই শিশুসহ সাতজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহতদের মধ্যে নগাঁও জেলার দুই পুলিশ সদস্য রয়েছে। তারা রোববার গভীর রাতে কামপুরে বন্যার পানিতে গিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন।
এএসডিএমএ’র তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মে ও জুন মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা বিগত বছরগুলোর তুলনায় স্বাভাবিক গড়ের চেয়ে বেশি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করতে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল আসাম ও মেঘালয়ের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও কনরাড সাংমার সঙ্গে আলাপ করার পরে তিনি জানান, কেন্দ্র এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জি ডি ত্রিপাঠি বলেন, এ ধরনের ভারী বর্ষণ এই মৌসুমে আবহাওয়ার চরম বিপর্যয়কর ঘটনা। অতিবৃষ্টি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।
গত ১৬ জুন ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) তথ্য অনুযায়ী, মেঘালয়ে গত সপ্তাহে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আসামে ১০০ শতাংশ বেশি এবং অরুণাচল প্রদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) গুয়াহাটি অফিস সোমবার এই অঞ্চলের সাতটি রাজ্যের জন্য একটি নতুন বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও ত্রিপুরায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আসামজুড়ে বন্যায় বর্তমানে ৪৭ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা মোট দুই লাখ ৩১ হাজার ৮১৯ জন বর্তমানে এক হাজার ৪২৫টি শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানায় রাজ্য সরকার।
প্রতিবেশী মেঘালয়ে সোমবার বন্যায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে পশ্চিম খাসি পাহাড় এবং পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কয়েকটি স্থানে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।
রোববার গভীর রাতে অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধসে ১৬ বছর বয়সী কিশোর নিহত হয়েছে, এতে এপ্রিল থেকে রাজ্যটিতে বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভূমিধসের মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ জনে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস