যেভাবে এল বিশ্ব বাবা দিবস

বাবা দিবস কেমন করে এলো? বাবা দিবস তো আমরা পালন করি। কিন্তু এই দিবসটির পেছনের গল্প কি জানি? তথ্যটি খুব একটা আনন্দের না। বরং এর পেছনে আছে সংগ্রামের একটা গল্প। একশ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসার গল্পটা বেদনারই বলা যায়।

মা দিবস প্রথম পালিত হয়েছিল ১৮৬০ সালে। সেই তুলনায় বাবা দিবসের বয়স কমই বলা যায়। আমেরিকাতে মা দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করা শুরু হয় সেই ১৯১৪ সাল থেকে। মা দিবস যতটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে বাবা দিবসের এক্ষেত্রে একটু সময়ই লেগেছে বলা চলে।

১৯০৮ সাল। পশ্চিম ভারজিনিয়ার এক গীর্জায় একটি স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে। এর আগের বছরই একটি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিল ৩৬২ জন কয়লা শ্রমিক। তাদেরকে সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন। ইতিহাস এমনটাই বলছে। যদিও বাবা দিবসের সঙ্গে এর তেমন কোন সম্পর্কে নেই। তবে ঠিক এর পরের বছর ১৯০৯ সালে সনোরা স্মার্ট ডড নামের এক নারী বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালো বাসতেন। মা ছিলনা তাদের। তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।

অনেক চেষ্টা চরিত্র করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটি গুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথম বারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস। শুরুটা ওয়াশিংটনে হলেও ধীরে ধীরে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আস্তে আস্তে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। দীর্ঘ ছয় দশক পর মিলে বাবা দিবসের স্বীকৃতি। ১৯৭২ সালে তখনকার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেন।

তবে এর মাঝে বেশ কিছু আন্দোলনও হয়ে গেছে মা দিবস এবং বাবা দিবস একসাথে করে প্যারেন্ট ডে পালনের জন্য। তবে বেশিরভাগ মানুষ আলাদা আলাদা দিন পালনেই রত থাকলো। অবশ্য কেউ কেউ এটিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ধান্ধা বলতেও কার্পণ্য করেনি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয়। বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাবা দিবস হচ্ছে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার। দক্ষিণ আমেরিকায় এটি পালিত হয় ১৯ এ মার্চ। অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে পালন করা হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রবিবার।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *