বিশ্ব বাবা দিবস আজ

বাবা মানে বটবৃক্ষের ছায়া। বাবা মানে নির্ভরতা। শাস্ত্রে বলা হয়-‘পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম পিতাহী পরমং তপঃ। পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতা।’ এর অর্থ-‘পিতাই ধর্ম, পিতাই স্বর্গ, পিতাই পরম তপস্যা। সন্তানের প্রতি পিতা বা বাবার ভালোবাসা চিরকালের।’ বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের একটি অন্যতম দিন বাবা দিবস। আজ সেই দিন। প্রতিবছর জুনের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী বাবা দিবস উদ্যাপিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এ ধারণা প্রচলিত হলেও আমাদের দেশেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়।

১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে প্রথম ৫ জুলাই দিবসটি পালন করা হয়। এরপর ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুনের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসাবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে দিনটির উদ্যাপন আরও আড়ম্বরভাবে হয়ে থাকে। আজ বিশ্বের সব বাবার প্রতি ভালোবাসা জানাবেন সন্তানরা। ভালোবেসে উপহারও দেবেন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের ওয়ালগুলো ভরে যাবে প্রিয় বাবার ছবিতে। যাদের বাবা বেঁচে আছেন তারা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ছবি আপলোড করবেন। আর যাদের বাবা নেই, তারা বাবার ছবি পোস্ট করে, বাবাকে নিয়ে লিখে স্মৃতিচারণ করবেন।

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে বাবা-মা দুজনই সন্তানকে লালনপালন করে বড় করে তোলেন। কারও দায়িত্ব কারও চেয়ে কম নয়। আধুনিককালে একক পরিবারে বাবার গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক পরিবারে বাবা-মা দুজনই উপার্জন করেন। কিন্তু এখনো আমাদের দেশের অনেক পরিবারে বাবাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবার উপার্জনেই সংসারের সব ব্যয়নির্বাহ হয়। সন্তানের শারীরিক, মানসিক দুই ধরনের বেড়ে ওঠার জন্য বাবা তার সবকিছু উজাড় করে দেন। অনেক বাবা নিজে আধ পেট খেয়েও সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন। সন্তানকে সুস্থ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে বাবা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। বাবার আদর্শ, মূল্যবোধ, চিন্তাচেতনা সন্তানের ওপর দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এজন্য বলা হয়ে থাকে-বাবার হাত ধরেই সন্তানের চলতে শেখা। এ চলতে শেখার পাঠ সন্তানকে শিশুকাল থেকেই বাবা দিতে শুরু করেন। সন্তানের মঙ্গলার্থেই বাবার সারা জীবন ব্যয় হয়।

বর্তমান করোনাকালে অনেক বাবা ভালো নেই। অনেক বাবা কাজ হারিয়েছেন, অনেকের উপার্জন কমে গেছে। এরপরও সব কষ্ট সহ্য করে সন্তানকে আগলে রাখছেন বাবা। সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে তিনি নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাবার সেই কষ্টের প্রতি সন্তানরা আজ শ্রদ্ধা জানাবে।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *