সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল বিশ্বব্যাংক। এই সুপারিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু অনুরোধ রক্ষা না করায় বিশ্বব্যাংক নাখোশ হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। আজ শনিবার পদ্মা সেতু নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন হওয়ার কারণে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে আদালতে তা প্রমাণ করার সুযোগ ছিল না। এ কারণে (মন্ত্রীকে) জেলে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাকে পদ থেকে সরে যেতে এবং দেশ ছেড়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার এবং সে দেশে থাকার সব আর্থিক ব্যয়ভার বহন করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। সব প্রস্তাবই তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
‘শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু : বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশ তথা উন্নয়নশীল দেশসমূহের এক যুগান্তকারী বিজয়’ শীর্ষ জাতীয় এই সেমিনার আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি। ড. মশিউর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, পানিসম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ড. গোলাম রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন করার কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু এক পর্যায়ে দুর্নীতির অভিযোগে অর্থায়ন থেকে সরে আসে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা এই সংস্থাটি। তখনকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ড. মশিউর রহমান, যোগযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন, সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। পরে অবশ্য অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। কানাডার আদালত এ সংক্রান্ত সব অভিযোগ খারিজ করে দেন।
ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, অভিযোগের জবাবে আমার অবস্থান নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে একটি চিঠি তিনি প্রস্তুত করেছিলেন। যাতে আমি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারি। কিন্তু সে সময়ের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, তোমার চিঠি পাঠানো ঠিক হবে? এতে নারাজ হবে বিশ্বব্যাংক। পরে সে চিঠি আর পাঠানো হয়নি।
ডব্লিউজি/এমএ