সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি

সারাদেশের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে জেলা সদরের প্রতিটি মহল্লা, অলিগলিতে পানি প্রবেশ করছে। প্রতিটি মহল্লার ঘরের ভেতরে হাটু পানি সড়কে কমর পানি। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ প্রতিটি উপজেলা পানিতে তলিয়ে তলিয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলার সাথে। খেটে খাওয়া মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

এদিকে, সুরমা নদীর পানি ৭৫ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বন্দী হয়ে পড়ায় জেলার প্রতিটি উপজেলা,ইউনিয়নে-ইউনিয়নে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জানা যায়, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকায় সৃষ্ট বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি ত্রাণসহায়তা পাঠাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক। সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি এলাকা, উকিল পাড়া, রপিন নগর, জামতলা, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, হাসননগর, নবীনগরসহ কয়েকটি এলাকার ঘর ও সড়কে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মৎস্য খামার, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজার। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা সুমন আহমেদ জানান,ঘরের ভিতরে হাটু পানি। চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি। এমন বন্যা আমার জীবনের প্রথম দেখলাম। এই এলাকার পানিতে ডুবে যাওয়ার বাসার বাড়ির মানুষ জন অন্য এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। শুধু এই এলাকাই নয় জেলা শহরের প্রতিটি এলাকায় একেই অবস্থা।

শহরের ব্যস্থতম এলাকা ট্রাফিক পয়েন্ট দোকানী সুমন দে জানান,দুপুর পর্যন্ত ভালই ছিল,বিকেলের পর থেকে মুসল ধারে বৃষ্টি সেই সাথে বজ্রপাত। সন্ধ্যার সাথে সড়কে হাটু পানির উপরে। ঘরেও পানি উঠেছে। খুব খারাপ অবস্থা। ২০০৪ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে এই বন্যা।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মব কর্তা মোঃ রায়হান কবির জানান, পানিতে উপজেলার চারপাশ কানায় কানায় পরিপূর্ণ। নিন্মাঅঞ্চলে পানি বাড়ছে। আমরা খুবেই সর্তক অবস্থানে আছি। খোঁজ খবর রাখছি,বন্যা আক্রান্ত এলাকায় সহায়তা দেয়া হবে। আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, সরকার সব সময় বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের পাশে আছে।সরকারিভাবে পর্যাপ্ত সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সার্বিক সহায়তা দেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মো জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জ শহরে প্রবল বেগে পানি আসছে। আমার বাসাতেও পানি উঠেছে। আমাদের ছাতক উপজেলা পুরোপুরি পানির নিচে। দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রায় সব জায়গায় পানি। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ। সড়কে পানি উপচে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর সড়ক গত তিন দিন যাবত বন্ধ আছে।

ডব্লিউজি/এএইচ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *